আগরতলা, ১২ জুলাই, ২০১৫
আগরতলা প্রধান ডাকঘরের কোর ব্যাঙ্কিং পরিষেবা রবিবার আনুষ্ঠানিকভাবে উৎসর্গ করলেন কেন্দ্রীয় যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী শ্রী রবিশংকর প্রসাদ। আগরতলায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে এদিন তিনি ফলক উন্মোচন করে ডিমাপুর মুখ্য ডাকঘরেরও শিলান্যাস করেন। এছাড়া আগরতলা প্রধান ডাকঘরের ‘পোষ্ট সপি’-র উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এদিনের অনুষ্ঠানকে স্মরনীয় করে রাখতে তিনি উজ্জ্বয়ন্ত রাজপ্রাসাদ সম্পর্কিত একটি ‘কভার’ও প্রকাশ করেন।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ডাকঘর গুলিতে ‘স্বচ্ছ ভারত”, তথ্য-প্রযুক্তির রূপায়ন, গ্রামীন ডাকঘর জীবন-বিমা, ডাকঘর জীবন-বিমা ইত্যাদি ক্ষেত্রে উত্কর্ষতার স্বীকৃতি স্বরূপ সংশ্লিষ্ট ডাকঘর আধিকারিকদের পুরস্কৃত করা হয়। আগরতলা ডিভিশনের অন্তর্গত উদয়পুরের রাধাকিশোরপুর ডাকঘর ‘স্বচ্ছ ভারত’ কর্মসূচি রূপায়নের জন্য পুরস্কৃত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় যোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী বলেন, সারা দেশে ১ লক্ষ ৫০ হাজারেরও বেশি ডাকঘর রয়েছে। এর মধ্যে ১ লক্ষ ২০ হাজারেরও বেশি ডাকঘর রয়েছে গ্রামীন এলাকায়। এই জন্যই দেশের গ্রামীন এলাকার জনগণকে ডিজিটাল ব্যবস্থায় সক্ষম করতে ডাকঘরগুলির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কোর ব্যাঙ্কিং পরিষেবা এই লক্ষ্যপূরনে অন্যতম পদক্ষেপ। তিনি জানান, ২০১৪ সালের আগে সারা দেশে ২৩৫ টি ডাকঘরে কোর ব্যাঙ্কিং পরিষেবার সুবিধা ছিল। বর্তমানে এই সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে ২৫৯০ টি ডাকঘরে। প্রধানমন্ত্রীর বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও কর্মসূচির উল্লেখ করে, শ্রী রবিশংকর প্রসাদ বলেন, প্রত্যন্ত এলাকায় বসবাসকারীরাও যাতে নিজেদের কন্যা সন্তানের ভবিষ্যত্ সুরক্ষিত করতে পারে, সেজন্য ডাকঘরের মাধ্যমে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে সুকন্যা সমৃদ্ধির অ্যাকাউন্ট খোলার সুবিধা | চলতি বছরের জানুয়ারিতে চালু হওয়ার পর সারা দেশে এখনো পর্যন্ত এই ক্ষেত্রে ৫২ লক্ষ অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে এবং মোট ১০০০ কোটি টাকা ঐসব অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে । ডাক পরিষেবাকে আরও জনমুখী ও উন্নত করার উপর গুরুত্বারোপ করে শ্রী প্রসাদ বলেন, ডাকঘরগুলির মাধ্যমে ই-কমার্স চালু করার বিষয়ে তাঁর মন্ত্রক উদ্যোগ নিয়েছে। আগামী দেড় বছরের মধ্যে সৌরশক্তি চালিত হ্যান্ড ডিভাইসের মাধ্যমে গ্রামীন এলাকায় ডাক পরিষেবা জনদুয়ারে পৌঁছতে দেওয়ারও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
আগরতলা প্রধান ডাকঘরে কোর ব্যাঙ্কিং পরিষেবা সম্পর্কে জানাতে গিয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চল সার্কেলের চিফ পোস্টমাস্টার জেনারেল শ্রীমতি স্মিতা কুমার বলেন, আগরতলা প্রধান ডাকঘর গত ২৭ এপ্রিল, ২০১৫-তে কোর ব্যাঙ্কিং(সিবিএস) এর আওতায় এসেছে। এই ব্যবস্থা চালু হওয়ায় দেশের যেকোন প্রান্তে বসবাসকারীদের সাথে ত্রিপুরার জনগণ স্বল্প সময়ে আর্থিক লেনদেন করতে পারবে। সিবিএস’র মাধ্যমে জনগণকে এখন সর্বোত্তম পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। শ্রীমতি কুমার জানান, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ডাকঘরের উদ্যোগে ২৪ টি এ.টি.এম স্থাপন করা হবে এবং এরমধ্যে ৮টি এটিএম চালু হবে ত্রিপুরায়। আগরতলা প্রধান ডাকঘরে এখনো প্রর্যন্ত ২৮০ টি ‘সুকন্যা সমৃদ্ধি’ অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে বলে তিনি জানান। সমগ্র উত্তর পূর্বাঞ্চলে ডাক পরিষেবার মান সম্পর্কে আলোকপাত করে শ্রীমতি কুমার জানান, স্পীড পোষ্ট ডেলিভারীর ক্ষেত্রে উত্তর-পূর্বাঞ্চল গত বছরে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। এদিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী শ্রী তপন চক্রবর্তী সহ অন্য বিশিষ্ট ব্যক্তি ও আধিকারিকরা।