Manabendra Nag, ProMASS News: Agartala: Sep 18, 2016: ত্রিপুরা রাজ্য আবাসন পর্ষদ নিয়ন্ত্রিত আগরতলার কুমারীটিলাস্থিত শ্যামলিমা অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে বসবাসকারি আবাসিকরা নানা সমস্যায় ভুগছে। শ্যামলিমা অ্যাপার্টমেন্টের বিভিন্ন ব্লকগুলি পানীয় জল, বিদ্যুৎ পরিষেবার মত অত্যাবশকীয় পরিষেবা সংক্রান্ত সমস্যায় জর্জরিত। রাজ্য সরকারের পূর্ত দপ্তরের অধীন আবাসন পর্ষদের উদ্যোগে নির্মিত মোট ৪৪০টি আবাসনের মধ্যে ২০০টি আবাসনে বর্তমানে আবাসিক রয়েছে। আবাসিকদের মধ্যে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মচারির সংখ্যাই বেশি।

রাজ্য সচিবালয়ের উত্তর প্রান্তে কুমারীটিলায় নির্মিত এই আবাসনে প্রায় অর্ধেক ঘর খালি পড়ে থাকার কারণ জিজ্ঞাসা করায় স্থানীয় আবাসিকদের অভিযোগ, পানীয় জল ইত্যাদি অত্যাবশকীয় পরিষেবার অভাব ছাড়াও আরও বেশ কিছু গুরুতর সমস্যা রয়েছে। আবাসনের চারপাশে কোন ফেন্সিং বাউন্ডারি নেই, এমনকী কোন সদর ফটকও নেই। ফলে কমপ্লেক্সের নিরাপত্তার কোন গ্যারান্টি নেই। রাতের অন্ধকারে কমপ্লেক্সের চারপাশে নানা অসামাজিক কাজকর্ম হয় এবং বখাটে ছেলেদের আড্ডা জমে। এইরকম পরিস্থিতিতে কমপ্লেক্সের সার্বিক নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে বলে আবাসিকদের অভিযোগ। কর্তৃপক্ষকে বারবার বলা সত্ত্বেও, এনিয়ে আবাসন পর্ষদের কোন হেলদোল নেই।
কুমারীটিলার এই আবাসনের অন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হল যাতায়াতের সমস্যা। অটো, বাস ইত্যাদির ব্যবস্থা নেই। ফলে কমপ্লেক্স থেকে যেকোন কাজে বেরুনোর জন্য ব্যক্তিগত যানবাহনই ভরসা। আবাসিকদের দৈনন্দিন প্রয়োজনে বাজারহাট করার জন্য কাছাকাছি কোন বাজার নেই এবং যান সমস্যার জন্য আবাসিকদের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈকা আবাসিকের বক্তব্য, কর্মরত পুরুষরা ব্যক্তিগত যানে চড়ে নিজেদের কর্মস্থল পৌঁছানোর পর, দুপুরে কোন আবাসিককে বাইরে বেরুতে হলে সমস্যাটা বোঝা যায়, অনেকটা পথ হেঁটে তবেই অটো ইত্যাদি পাওয়া যায়।
এত স্বপ্ন নিয়ে গড়া এই আবাসনের বিভিন্ন ব্লকে পানীয় জলের ন্যূনতম ব্যবস্থা নেই। বাইরে থেকে জল কিনে এনেই আবাসিকদের পিপাসা মেটাতে হয়। পরিস্থিতি এমনও হয়েছে যে, স্নান-কাপড় কাচাকুচির জন্যও জল বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়। বিদ্যুৎ পরিষেবার হালও তথৈবচ।
মূলত: আবাসন পর্ষদের একাংশের খামখেয়ালীপনায় সরকারের সদিচ্ছার অকালমৃত্যু হচ্ছে বলে আবাসিকদের বক্তব্য। “সরকার মহৎ উদ্দেশ্যে এই আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়িত করেছে। অথচ সরকারী পয়সায় লালিত-পালিত একাংশ কর্মী-আধিকারিকদের গাফিলতিতে আজ সরকারের দুর্নাম হচ্ছে। রাজ্য সরকারের জনদরদী ভাবমূর্তি রয়েছে, অথচ সেই ভাবমূর্তি আবাসন পর্ষদের কাজে প্রতিফলিত হচ্ছে না। পর্ষদের একাংশের খামখেয়ালীপনা আসলে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চক্রান্ত নয়তো” – এই প্রশ্ন তুলেছেন আবাসিকরা। কিন্তু এই আবাসনের প্রকৌশলী সুজিত রায় অবশ্য এইসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর মতে, আবাসনে তেমন কোন সমস্যা নেই। পানীয় জলের অভাব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করায় অবশ্য তিনি জুতসই কোন জবাব দিতে পারেন নি।