ProMASS: Jan 18, 2017: আকাশবাণী আগরতলা কেন্দ্র আগামী ২৬ জানুয়ারী ২০১৭-তে ৫০ বছরে পদার্পণ করছে| ১৯৬৭ সালের ২৬ জানুয়ারী এই কেন্দ্রের যাত্রা শুরু হয়েছিল| সেসময় এই কেন্দ্রের উদ্বোধন করেছিলেন ত্রিপুরার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত শচীন্দ্র লাল সিংহ মহোদয়|
আগরতলা থেকে আকাশবাণীর বেতার সম্প্রচারের শুরু হয়েছিল কলেজটিলার একটি অস্থায়ী কেন্দ্র থেকে| পরে অনুষ্ঠান সম্প্রচার শুরু হয় রানিরবাজার এর বৃদ্ধিনগর স্টেশন থেকে| শুরুতে এই কেন্দ্রটি কলকাতা কেন্দ্রের অনুষ্ঠান সম্প্রচার করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল বটে, পরে তা স্বয়ংসম্পূর্ণ সম্প্রচার কেন্দ্রের চেহারা নেই ১৯৭৪.সালে| এর সম্প্রচার শুরু হয়েছিল ১০ কিলোওয়াট ক্ষমতার ২-টো মিডিয়াম ওয়েভ ট্রান্সমিটার দিয়ে| ১৯৭৯-থেকে আকাশবাণী আগরতলা কেন্দ্র প্যালেস কম্পাউন্ড কার্যালয় থেকে কাজ শুরু করে; কেন্দ্রের মূল কার্যালয়ও এখানেই| ১৯৭৪-র পর ১৯৯৫-এ নতুন ২-টি ১০ কিলোওয়াট ক্ষমতার ট্রান্সমিটার (মিডিয়াম ওয়েভ) বসানো হয়| এদের ফ্রিকয়েনসি ছিল ১২৬৯ কিলো হার্টজ; এতে আকাশবাণী আগরতলা কেন্দ্রের অনুষ্ঠান শোনা যেত ৬০ কিমি পর্যন্ত|
এর অতিরিক্ত হিসেবে, ২০০৫-এর ১৫ আগস্ট আগরতলা কেন্দ্রে বসানো হয় ১০ কিলোওয়াট ক্ষমতার এফ এম ট্রান্সমিটার ; কিন্তু আকাশবাণী আগরতলা কেন্দ্রের নিজস্ব টাওয়ার না থাকায় “ইন্টেরিম মাস্ট”-এ ২ কিলো ওয়াট ক্ষমতায় সম্প্রচার শুরু হয় ১৩ নভেম্বর, ২০১২ থেকে; এর প্রসারণ ক্ষমতা ২০ কিমি অঞ্চল পর্যন্ত|
বর্তমানে, আকাশবাণীর মিডিয়াম ওয়েভ-এ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়, একটি মাত্র ১০ কিলো ওয়াট ট্রান্সমিটারের সাহায্যে, সকাল ৫.৫৫ মিনিট থেকে রাত ১০.৩০ মিনিট পর্যন্ত| এর আওয়তায় রয়েছে ৩০ কিমি এলাকা|
যে স্টেশনের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল কলকাতা থেকে অনুষ্ঠান রিলে করা দিয়ে, গত ৫০ বছরে এই স্টেশনের কার্যক্রমের ব্যাপ্তি ঘটেছে অনেক| ২০১১-এ সমীক্ষা অনুসারে আগরতলা কেন্দ্র থেকে প্রচারিত অনুষ্ঠানের শ্রোতা সংখ্যা ৩৩ লাখ ৬২ হাজার|
বিভিন্ন সময় সময়ে নানা অনুস্ঠান এর প্রবর্তন হয়ে বর্তমানে যেসব অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হচ্ছে এদের মধ্যে উলেখযোগ্য কয়েকটির উল্লেখ করা হলো:
শিশুমেলা (বাংলা, ১৯৭৪ থেকে); শিশুমেলা (ককবরক, ১৯৭৬ থেকে); যুববাণী (বাংলা, ২০. ২ ১৯৭৮ থেকে); অঙ্গনা (১৯৮৩ থেকে), বিদ্যার্থীদের অনুষ্ঠান (১৯৮৪ থেকে; অভিজ্ঞাপন (১.৪. ১৯৯০ থেকে); খেলার আসর (১৯৯৩ থেকে); সান্ধ্য বাংলা স্থানীয় সংবাদ (২৪.৫.১৯৭৫ থেকে); সকালের বাংলা সংবাদ (১২.১০.১৯৯৪ থেকে); সান্ধ্য ককবরক খবর (১.৭.১৯৭৪ থেকে); সকালের ককবরক খবর (১১.৬.১৯৯৭ থেকে); লাইভ ফোন-ইন অনুষ্ঠান (১৫.৮.১৯৯৯ থেকে) সুস্বাস্থ্য লাইভ ফোন –ইন (১৭-৮-১৯৯৯ থেকে)|
আগামী ২৬ জানুয়ারী থেকে কেন্দ্রের সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠান শুরু হচ্ছে| ষ্টুডিও থেকে এই অনুষ্ঠানগুলি যথারীতি সম্প্রচার করা হবে|| ৩০ জানুয়ারী থেকে সুবর্ণ জয়ন্তীর মূল আনুষ্ঠানিক উদযাপন শুরু হবে| ৩০ তারিখ সকাল ১১ টায় আকাশবাণী আগরতলা কেন্দ্রের প্যালেস কম্পাউন্ড প্রাঙ্গনে সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানের সূচনা করবেন মাননীয় রাজ্যপাল তথাগত রায়; সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শ্রী ডি. এন বসুমাতারি, অতিরিক্ত মহা নির্দেশক, (উত্তর-পূর্ব)| এই অনুষ্ঠানে সম্বর্ধনা দেওয়া হবে বিখ্যাত জিমন্যাস্ট কুমারী দীপা কর্মকারকে| এছাড়াও থাকবে অন্যান্ন সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান| এদিন সন্ধ্যা ৫ টা থেকে শুরু হবে ২ পর্ব, আকাশবাণী আগরতলা কেন্দ্রের প্রাঙ্গনে প্রদর্শিত ও মঞ্চস্থ হবে সেমিনার : “এই সময়ে নিউ মিডিয়ার দৌরাত্মে বেতারের ভুমিকা”| এছাড়া থাকবে পুতুল নাচ, অন্যান্ন সংস্কৃতিক অনুস্ঠান|
৩১ জানুয়ারী সকাল ১১-টায় কেন্দ্রের প্যালেস কম্পাউন্ড প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আগরতলার মেয়র ড. প্রফুল্লজিৎ সিনহা|এই পর্বে, রাজ্যের কৃতি মহিলা ফুটবলার লক্ষিতা রিয়াং-কে সম্বর্ধনা জানানো হবে| এদিন সন্ধ্যায় ২-য় পর্বের অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে-র ২য প্রেক্ষাগৃহে: সন্ধ্যা ৬ টায় এই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে আসন অলংকৃত করবেন মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রী মানিক সরকার| থাকবে সংবর্ধনা অনুস্ঠান ও সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান | রাজ্যের ও বহিরাজ্যের শিল্পীরা বাংলা ও ককবরক ভাষায় লোক ও উপজাতি সংস্কৃতির নানা অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ করবেন|
সর্বশেষে, সুবর্ণ জয়ন্তী বছরে আকাশবাণী আগরতলা কেন্দ্রে যুক্ত হচ্ছে একটি নতুন ১০ কিলো ওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন এফ এম ট্রান্সমিটার|