Feb 05, 2017: এক মাসও বয়স হয় নি, কিন্তু এরই মধ্যে অল ত্রিপুরা ইন্ডিজিনিয়াস রিজিওনাল পার্টি ফোরাম-এর ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কেন্দ্রের নাগরিকত্ব বিল সংশোধনী প্রস্তাবের বিরুদ্ধে রাজ্যের উপজাতি ভিত্তিক আই পিএফ টি, আই এন পি টি এবংএন সি টি মিলিতভাবো গত ১৫ জানুয়ারি একটি ফোরাম গঠন করে।আদিবাসীদের স্বার্থ রক্ষার অঙ্গীকার গ্রহণ করে রাজ্য ও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার আহ্বান জানিয়েছিল এই ফোরামের নেতৃবৃন্দ। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল-এর বিরোধিতা করে এ ডি সি এলাকায় ৮ ফেব্রুয়ারি বনধও ডাকা হয়। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, আদিবাসীদের স্বার্থ রক্ষার চাইতেও তিন উপজাতি ভিত্তিক দল যদি মিলিত ভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়, তাহলে অ-বাম ভোট ভাগের সম্ভাবনা থাকবে না এবং পাহাড়ে বামপন্থীদের একচ্ছত্র আধিপত্যও খর্ব হবে। স্বাভাবিক কারণেই বামপন্থীরা এই ফোরাম গঠনে ভালো ভাবে নেয় নি, কিন্তু ফোরাম-কে স্বাগত জানিয়েছে বি জে পি।
কিন্তু বর্তমানে ফোরামের অস্তিত্ব নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠেছে। সম্প্রতি আই পি এফ টি দলের নেতা বুধু দেববর্মা এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, ৮ ফেব্রুয়ারি এ ডি সি বনধ্-এর পর ফোরামের অস্তিত্ব বিলোপ পাবে। আই পি এফ টি দলের নেতারা অবশ্য ্গত দুদিন ধরে বুধু দেববর্মার বক্তব্য ভিত্তিহীন বলে এসেছে। আজ আই পি এফ টি’র সহ-সাধারণ সম্পাদক রাজেশ্বর দেববর্মা যে মন্তব্য করেছেন, তাতে ফোরাম যে স্থায়ী কোন মঞ্চ না সেটাই প্রমাণিত হয়েছে বলে তথ্যাভিজ্ঞ মহলের ধারণা। রাজেশ্বর দেববর্মা জানিয়েছেন, বুধু দেববর্মার অনেক আগেই অপর উপজাতি ভিত্তিক দল আই এন পি টি’র সভাপতি বিজয় রাঙ্খল পরিস্কারভাবেই নাকি জানিয়েছেন, ফোরামের স্থায়িত্ব ৮ ফেব্রুয়ারির বনধ পর্যন্ত, এরপর বিলুপ্ত হবে অল ত্রিপুরা ইন্ডিজিনিয়াস রিজিওনাল পার্টি ফোরাম।
ফোরাম বিলুপ্তির খবর প্রকাশ পাওয়ার পর থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে, বিশেষত পাহাড়ি এলাকায় বিশেষ সাড়া পড়েছে। ফোরামের হাত ধরে হয় তৃণমুল কংগ্রেস কিংবা বি জে পি আদিবাসী ভোটে ভাগ বসাবে বলে অনেকে ধারণা করেছিল। প্রকৃতপক্ষে আসন্ন রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে ফোরামের সঙ্গে বি জে পি নির্বাচনী আঁতাত করার পরিকল্পনার আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু ফোরামের অস্তিত্বই যদি না থাকে তবে আঁতাতের ভিত্তি দুর্বল হবে, এটা সবারই জানা। বিশেষ করে আই পি এফ টি’র সঙ্গে আলাদা ভাবে জোট বাঁধার আগে বি জে পি কিংবা তৃণমুল কংগ্রেস-কে অনেক অঙ্ক কষে এগুতে হবে। কারণ, আই পি এফ টি শুরু থেকেই আদিবাসীদের জন্য পৃথক রাজ্যের দাবিতে সোচ্চার। এক্ষেত্রে আই পি এফ টি-র সঙ্গে জোট গড়লে, আখেরে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। রাজনৈতিক মহলের মতে, ফোরাম বিলুপ্ত হলে, সব চাইতে লাভবান হবে বামপন্থী দলগুলি। উল্লেখ্য, আদিবাসীদের মধ্যে বামপন্থীদের সংগঠন খুবই শক্তিশালী এবং ফোরাম-এর মত কোন মঞ্চ না থাকলে বিরোধী ভোট ভাগাভাগি হয়ে বিপুলভাবে বামপন্থীদের জয় সুনিশ্চিত। কাজেই রাজ্য রাজনীতিতে ফোরামে ফাটল বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, বিশেষত বিরোধী দলগুলির কাছে।