আগরতলা: ১১ জুলাই, ২০১৫
কেন্দ্রীয় যোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী শ্রী রবিশংকর প্রসাদ আজ আগরতলায় ইন্টারনেট পরিসেবা সংস্লিষ্ট আন্তর্জাতিক দুয়ার বা ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ভিত্তি প্রস্তর নির্মানের ফলক উন্মোচন করেন| আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে শ্রী রবি শংকর প্রসাদ বলেন, আই জি ডবলিউ এমন একটি প্রকল্প যা ত্রিপুরা সহ গোটা উত্তরপূর্বাঞ্চলে টেলি-পরিষেবা বিশেষত: ইন্টারনেট পরিষেবাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে সহায়ক হবে।
ত্রিপুরায় বিএসএনএল-র পরিষেবা সম্প্রসারনের লক্ষ্যে এবং সার্বিক টেলি-যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে মোট ৬৭ কোটি টাকা খরচ করা হবে বলে তিনি জানান। রাজ্যের চারটি জায়গায় নেক্সট জেনারেশন নেটওয়ার্কের কাজ শেষ হয়েছে এবং অন্য ছয়টি জায়গায় এই নেটওয়ার্কের কাজ চলছে। এরাজ্যে ৭০টি ওয়াই-ফাই হট স্পট স্থাপনের পরিকল্পনাও সরকারের রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। শ্রী রবি শংকর প্রসাদ বলেন, রাজ্যের ৮টি জেলাকেই ন্যাশনাল নলেজ নেটওয়ার্ক (এন কে এন) প্রকল্পের আওতায় আনা হবে এবং গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকেও ইন্টারনেট পরিষেবার আওতায় আনা হবে। তিনি আরও বলেন, উত্তর-পুর্বাঞ্চলের জন্য টেলি পরিষেবা ক্ষেত্রে ৫০০০ কোটি টাকা খরচ করার পরিকল্পনা সরকার নিয়েছে।
ভারত সরকারের গৃহীত উদ্যোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তথ্যই ক্ষমতায়নের মূল চালিকাশক্তি। ভারত সরকার বিগত এক বছরে এই শক্তিকে দেশের উন্নয়নের কাজে লাগাতে বেশ কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে। যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী বলেন, দেশের জনগণের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ভারত সরকার ডিজিট্যাল ইন্ডিয়া, মেক-ইন-ইন্ডিয়া এবং স্কিল ইন্ডিয়া উদ্যোগ গ্রহন করেছে। দেশের তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে উন্নয়নে বি এস এন এল-এর ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সম্প্রতি জনগণের স্বার্থে বি এস এন এল দুটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে। এগুলি হল: নৈশকালীন সময়ে (রাত ৯ টা থেকে সকাল ৭ টা পর্যন্ত) যে কোন ধরনের কল নি:শুল্ক করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত: নি:শুল্ক –ইনকামিং রোমিং ব্যবস্থাও বি এস এন এল চালু করেছে।
এদিনের অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল শ্রী তথাগত রায় বলেন, আই জি ডবলিউ প্রকল্পটি এরাজ্য তথা সমস্ত উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ইন্টারনেট পরিষেবার ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা করলো। তিনি বলেন, এই প্রকল্পটির তাৎপর্য হল এটি ভারত-বাংলাদেশের মৈত্রী সম্পর্কের দ্যোতক প্রকল্প এবং প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর ডিজিটাল ইন্ডিয়া কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই প্রকল্পটি চালু হলে রাজ্যে কল ড্রপ এবং ধীরগতির ইন্টারনেট পরিষেবার সমস্যা দূর হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। আই জি ডবলিউ প্রকল্পটির জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে এবং বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
আজকের এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী শ্রী মানিক সরকার বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিশেষত: টেলি-যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ছাড়া রাজ্যের বিকাশ সম্ভব নয়। এরাজ্য সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলে প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্য্য রয়েছে, তবে টেলি যোগাযোগ ও অন্যান্য পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে উত্তরপূর্বাঞ্চল অনেকটাই পিছিয়ে। রাজ্যে বিএসএনএল’র পরিষেবার মানোন্নয়ন ও সম্প্রসারনের প্রয়োজনীয়তার উপর তিনি গুরত্ব আরোপ করেন |
বি এস এন এল’র কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন সংস্থার সি এম ডি শ্রী অনুপম শ্রীবাস্তব। তিনি জানান, আই জি ডবলিউ প্রকল্প রূপায়নে মোট ২০ কোটি টাকা খরচ করা হবে, এছাড়া প্রতি বছরব্যান্ড উইডথ্ লিজ ফি বাবদ বাংলাদেশেকে ৭.২ কোটি টাকা দিতে হবে। আই জি ডবলিউ’র সম্পর্কে তিনি জানান, এই প্রকল্পটি চালু হলে, রাজ্যে শিক্ষা, ব্যাঙ্কিং পরিষেবা ইত্যাদি ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা পাওয়া যাবে। উল্লেখ্য সারা দেশে মোট পাঁচটি আই জি ডবলিউ আছে এবং আগরতলায় আজ থেকে যাত্রা শুরু করলো ষষ্ঠ আই জি ডবলিউ।
আজকের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী শ্রী তপন চক্রবর্তী, রাজ্যের সাংসদ শ্রীমতি ঝর্ণা দাস বৈদ্য, বি এস এন এল’র এনই-১ এর সি জি এম টি শ্রী ডি পি সিং সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।