ProMASS: Jan 20, 2017: ত্রিপুরার আদিবাসীদের ককবরক ভাষার আরও উন্নয়নের জন্য ভাষাটিকে সংবিধানের অষ্টম তফশিলের অর্ন্তভুক্ত করতে হবে। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এই দাবি জানানো হয়েছে। এই দাবি আদায়ে অন্য ভাষা গোষ্টির মানুষকেও এগিয়ে আসতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। ককবরক ভাষার স্বীকৃতি দিবসে গতকাল মুক্তধারা মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাদল চৌধুরী একথা বলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজাতি কল্যান মন্ত্রী অঘোর দেববর্মা এবং আগরতলা পুরনিগমের মেয়র ড:প্রফুল্লজিৎ সিনহা।
১৯৭৯ সালের ১৯ জানুয়ারী বামফ্রন্ট সরকার ককবরক ভাষাকে সরকারি ভাষায় স্বীকৃতি দেয় এবং অন্যতম সরকারি ভাষা হিসেবে গ্রহন করে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাদল চৌধুরী বলেন, একটি জাতি গঠনে ভাষা ও সংস্কৃতি প্রধান ভূমিকা পালন করে। রাজ্যবাসী নিজের বর্তমান অবস্থান থেকে নিজেকে আরও উন্নত করতে চান। আমাদের ভেবে দেখতে হবে আমরা কতটা এগিয়ে যেতে পেরেছি। রাজ্যের উপজাতি অংশের মানুষের ভাষা সংস্কৃতি রক্ষায় ১৯৭৮ সালে বামফ্রন্ট সরকার উদ্যোগ নেয়। শুধু ককবরক ভাষার বিকাশই নয়, অন্যান্য উপজাতি ভাষা গোষ্ঠির ভাষার বিকাশেও রাজ্য সরকার উদ্যোগ গ্রহন করে। মাতৃভাষায় পাঠদানের জন্য পাঠ্য পুস্তকও তৈরী করা হয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরেও ককবরক ভাষা পড়ানো হচ্ছে।
রাজ্য সরকারের নীতি হলো কারোর উপর কোন ভাষাকে চাপিয়ে দেওয়া হবেনা, একথা জানিয়ে তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই ককবরক ভাষায় পাঁচশোর বেশী বই প্রকাশিত হয়েছে। সাহিত্য সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন ককবরক ভাষার আরও উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে সবাই এগিয়ে আসবেন। তিনি ককবরক সাহিত্যপত্র ‘সাইমার’ আবরন উন্মোচন করেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতি উপজাতি কল্যান মন্ত্রী অঘোর দেববর্মা বলেন, শুধু রাজন্য শাসনেই নয়, রাজ্যে বামফ্রস্ট সরকার আসার আগে গনতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনাতেও ককবরক ভাষাকে অবহেলা করা হয়েছে। সময়মতো ভাষাটিকে মর্যাদা দিলে, পৃষ্টপোষকতা করলে এই ভাষাটি আরও এগিয়ে যেতে পারতো। রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার আসার পরই সব ভাষা সংস্কৃতির বিকাশের কাজ শুরু হয়।
মেয়র ড: প্রফুল্লজিৎ সিনহা বলেন, রাজন্য শাসনে ককবরক ভাষার বিকাশ ও সমৃদ্ধির জন্য কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার আসার পরই এই ভাষার বিকাশে কাজ শুরু হয়। এটাই ইতিহাস। তিনি বলেন, রাজ্যে শান্তি সম্প্রীতির পরিবেশ আছে বলেই উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে। ঐক্য সংহতিই আমাদের সব থেকে বড় মূলধন।
বক্তব্য রাখেন সমাজসেবী সলিল দেববর্মা, উপজাতি কল্যান দপ্তরের অধিকর্তা রবীন্দ্র রিয়াং। অনুষ্ঠানে ককবরক ছোট গল্প ও প্রবন্ধ রচনা প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের পুরষ্কৃত করা হয়। এছাড়া বিশিষ্ট ককবরক গল্পকার হরিপদ দেববর্মা এবং কবি সবিতা দেববর্মাকে সম্বর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়। পরে অনুষ্ঠিত হয় সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।