Paramita Gharai
July 26, 2019:
-দিব্যি দিলাম,মাথার দিব্যি।
-রাখতে পারবি কথা?
-পারব। খুব পারব। আর আসব না। জ্বালাবো না তোকে।
-বেশ দেখব।
-কি দেখবি?
-কেমন আমাকে না জ্বালিয়ে থাকিস।
– দেখিস।
গটগটিয়ে বেরিয়ে গেল দিয়া ।
– আসবে না আবার! এরকম কত্তবার হয়েছে। সকালবেলা মেঘ তো বিকেলে ঝলমলে রোদ।
অস্বস্তি লাগে অনীশের। জমে থাকা অ্যাশট্রের ছাই,
ধুলো জমা ফুলদানির খাঁজ, অগোছালো বই এর টেবিল ছুঁয়ে চোখ চলে যায় বিকেলের পড়ন্ত রোদে। আজ তিনদিন হয়ে গেল দিয়া আসেনি। এরকম তো হয়না কখনো। ফোনও করেনি।
উচ্চ মাধ্যমিকে একসাথে পড়াশোনা করলেও দিয়া ভর্তি হয়েছিল জুলজি নিয়ে আর অনীশ মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়তে চলে গেল। কিন্তু ওদের বন্ধুত্বে চির ধরল ন। সেটা মূলতঃ দিয়ার জন্য । নিয়ম করে ছুটিছাটার দিনগুলোতে অনীশের বাড়ি আসত দিয়া। অনীশের বাবামার সাথেও গল্প জুড়তে ও। মা এর সাথে রান্নাঘরে টুকিটাকি কাজে হাত লাগাত। যখন আসতো না তখন অনীশকে ফোন করে উত্যক্ত করতো। এক একসময়ে রেগে যেতে অনীশ। দু-দিন না এলে মাও ওকে পাঠাতো দিয়ার বাড়ি। ঘাড় ধরে ওকে নিয়ে আসতো অনীশ। কটা সিগারেট খাবে, বন্ধুদের সঙ্গে কতক্ষণ আড্ডা দেবে সব ব্যাপারে দিয়ার নাক গলাতো। এই নিয়ে রাগারাগি ,কথা বন্ধ ওদের দুজনের রুটিনমাফিক ব্যাপার।। কথা বন্ধ থাকলে কি হবে?অনীশের ঘরটা পরিপাটি করে গুছিয়ে রাখতে ভোলে না দিয়া। অনীশ বুঝতে পারতো দিয়াকে। কিন্তু এককালের সহপাঠীকে সারাজীবনের জন্য সঙ্গী করতে ওর মানসিক দ্বিধা ছিল।
দিয়ার পার্ট টু পরীক্ষা শেষ। পরদিনই হাজির হল অনীশের বাড়িতে । দিয়াকে দেখলেই অনীশ আজকাল কেমন যেন নিজেকে গুটিয়ে নেয়। নিজের ঘরে একটা বই খুলে বিছানার ওপর বসল। দিয়া চায়ের কাপ নিয়ে এল অনীশের কাছে। অনীশ ওর দিকে না তাকিয়ে হাতে নিল কাপটা। দিয়া অনীশকে বলল,”একবার তাকা আমার দিকে।” অনীশ তাকালো।
-আমি তোকে ভালোবাসি অনীশ। তুই?
-আমি তোকে বন্ধুর মতো ভালবাসি।
– তাহলে আমি আর আসব না তোদের বাড়িতে ।
-না এসে থাকতে পারবি?
দিয়া দিব্যি দিয়ে বেরিয়ে গেছিল সেদিন বিকেলে ।
না কোনো যোগাযোগ রাখে নি দিয়া। ফোন করেও পেল না। ঐ নম্বরের কোনো ফোন নংই নেই নাকি।মাএর কাছে বকুনি খেয়েছিল। বাবা গম্ভীর হয়ে গেছিল। উদ্বেগ নিয়ে অনীশ চারদিনের মাথায় ছুটে গেছিল দিয়ার বাড়িতে । বেল দিতে দরজা খুলে যিনি দাঁড়িয়েছিল তিনি দিয়ার মা নন। তাঁর মুখ থেকেই অনীশ জেনেছিল একমাস আগেই এই বাড়িটা ওনারা দিয়াদের থেকে কিনেছেন। দিয়ারা কোথায় চলে গেছে সে খবর উনি জানেন না । হতাশ হয়ে ফিরে এসেছিল অনীশ। একই পাড়াতে থেকে এই খবরটা অনীশ জানতে পারেনি। শূন্যতা ঘিরে ধরেছিল। বুঝতে পেরেছিল দিয়া ছাড়া ও অপূর্ণ।
দিয়া ওর ছোটবেলার সহপাঠিনী। সেই মন্তেসারী থেকে। নাইনে ওঠার পর দিয়ার বাবা হঠাৎই মারা যান। অফিসে সেরিব্রাল অ্যাটাক। দিয়ার মা একটা স্কুলে চাকরি করতেন । কলকাতার বাইরে। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার দিকে। সঠিক খবর কোনোদিনই দিয়ার থেকে নেওয়া হয়নি অনীশের। নিজের পড়াশোনার ঘেরাটোপে থাকতেই বেশ পছন্দ করত অনীশ। বন্ধুবান্ধব ছিল সীমিত সংখ্যক । তার মধ্যে দিয়া একজন। দিয়ার বাবা মারা যাবার পর থেকে অনীশের মা দিয়াকে কাছে টেনে নেন। দিয়াও নির্দ্বিধায় অনীশের বাড়িটাকে নিজের দ্বিতীয় আর একটা বাড়ি করে নিয়েছিল। দিয়ার মাও নিশ্চিন্ত হয়েছিলেন। স্কুল থেকে ফিরে দুটো টিউশন তাঁকে করতে হতো সংসারের প্রয়োজনে।
ফেলে আসা তিরিশটা বছর আঁতিপাঁতি করে দিয়াকে খুঁজেছে অনীশ। সোস্যাল মিডিয়াতে হাতড়িয়েছে।কিন্তু দিয়ার কোনো খোঁজ আজও পায়নি।
২
– ”বাবা , আজ তাড়াতাড়ি ফিরবে কিন্তু।”
সকালবেলা চা খেতে খেতে খবরের কাগজে চোখ বোলায় অনীশ। মেয়েটা এবার বারো ক্লাস পাশ করে তার মতোই ডাক্তারি পড়তে ঢুকেছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেই। মেয়ের আদুরে গলায় আব্দার শুনে খবরের কাগজ থেকে চোখ তুলল অনীশ। হাতকাটা টপ আর হট প্যান্ট পরা আঠারোর কন্যাটি মিটিমিটি হাসছে। পাশে রিমিও হাসিহাসি মুখে দাঁড়িয়ে ।
-কেন আজ কি ? অনীশ কাগজটা ভাঁজ করতে করতে জিজ্ঞেস করল। মা মেয়ে একসাথে সুর করে বলে উঠল, ”হ্যাপি বার্থডে টু ইউ”।
অনীশের মনে পড়ল আজ নভেম্বর মাসের নয় তারিখ । মেয়ের কপালে চুমু খেয়ে বলল, ”থ্যাঙ্কু মামনি”। রিমির পিঠ আলতো ছুঁয়ে হাসল অনীশ,” ফিরতে ফিরতে আটটা হবে। তৈরী থেকো।”
-হ্যাপি বার্থডে টু ইউ । পেছনে থেকে দুহাত কাঁধের ওপর রেখে ঝাঁকুনি দিল দিয়া। আর কদিন পরেই সেমিস্টার । অনীশ ব্যস্ত ছিল পরীক্ষার পড়া তৈরী করতে। দিয়াকে এক ধমক দিয়ে উঠেছিল ,”পড়ার সময় বিরক্ত করছিস কেন?” দিয়া কাঁচুমাচু মুখে পাশের তাক থেকে একগোছা গোলাপ হাতে নিয়ে বলেছিল ,”বাব্বা! পড় তুই। জন্মদিনের উইশ করতে এসেছিলাম । এই নে ধর।” লাল গোলাপের গোছাটা বাড়িয়ে দিয়েছিল। অনীশ গম্ভীর মুখে বলেছিল,’ঐ তাকেই রাখ।’ দিয়া সেখানে রেখেই চুপচাপ চলে গেছিল । রাতে খেতে বসে মা বলেছিল, ”দিয়া বসতে চাইল না। বলল শরীর খারাপ, মাথা ধরেছে। কেবল পায়েসটা খেয়ে চলে গেল।”
ট্রাফিক সিগন্যাল নজর পড়তেই জোড়ে ব্রেক কষল অনীশ । এক্ষুণি কেলেঙ্কারি হচ্ছিল!
সকালের দিকেই রুগীর চাপটা বেশী। তবে আজ অনীশের আউটডোর নেই। একটা ও.টি সেরে দুটো ক্লাস নিতে হবে। তারপর দশটার সময় সেখান থেকে বেরিয়ে পার্ক সার্কাস নার্সিংহোম । সেখানে গুনে গুনে দশজন রুগী দেখবে ও। তারপর একটার মধ্যে বাড়ি ফেরা। সন্ধ্যেবেলা অনীশ নিজের চেম্বারে বসে। নিউ গড়িয়া নতুন গড়ে ওঠা উপনগরীতে ও যথেষ্ট বিখ্যাত চোখের ডাক্তার ।
আজ ঠিক করেছিল বেশী রুগী দেখবে না। আটটার মধ্যে বাড়ি ঢুকে মামনি আর রিমিকে নিয়ে রাতের খাওয়া সারবে কোনো রেস্তোরাঁয়। রিসেপসনের দেবিকাকে বলে রেখেছিল অনীশ দশজনের বেশী যেন নাম না লেখে।
গ্রে রঙের হুন্ডাইটাকে রাস্তার একপাশে দাঁড় করিয়ে চেম্বারে ঢোকে অনীশ। ডঃ এ.চৌধুরী, অপথ্যালমোলজিস্ট , সোনালী রঙের নেমপ্লেটটার ‘ইন’ করে দিল দেবিকা। গটগটিয়ে ভেতরে ঢুকে গেল অনীশ। আজ একটুও দেরী করতে চায়না ও । বাড়িতে মামনি আর রিমি অপেক্ষা করে থাকবে। বেশীরভাগ রুগীই আসে চোখের পাওয়ার পরীক্ষা করতে। এরা অল্পবয়সী থেকে বেশী বয়সী। তবে বেশী বয়সীদের ক্ষেত্রে চোখে ছানি পড়ার কেসও থাকে। সেক্ষেত্রে মাইক্রোসার্জারীর ব্যবস্থা করার ব্যাপার থাকে। গ্লুকোমার সমস্যা নিয়েও অনেকে আসে। রুগী দেখা শেষ হয়ে এসেছে । নয় নম্বর পেসেন্টর ডাক পড়লো। ঘরে ঢুকলো একটি বছর পনেরোর কিশোরী,পরণে গোলাপী শার্ট আর নীল জিনস।সঙ্গে সাদা সালোয়ার কামিজে ওর মা।
-দিয়া! বিস্ময়ে হতবাক হয়ে নিজের থেকেই নামটা অনীশের গলা থেকে বেরিয়ে এল।
ভদ্রমহিলার অনীশের দিকে শান্ত সৌম্য দৃষ্টিতে তাকালেন। বললেন, ” পেসেন্ট আমার মেয়ে।”
সংযত হল অনীশ ,”কি হয়েছে? ”
– বোর্ডের লেখা দেখতে অসুবিধে হচ্ছে ।
নির্দিষ্ট চেয়ারে বসিয়ে চোখ পরীক্ষা করল অনীশ। এর ফাঁকে ফাঁকে দিয়ার দিকে চোখ চলে যাচ্ছিল অনীশের। একটা কি সেই দিয়া? এত শান্ত !ধীর স্থির ! সাজগোজের চিহ্নমাত্র নেই! সাদা সালোয়ার কামিজ, শুকনো ঠোঁটদুটো, চোখের নীচে কালি,কপালে বলিরেখা। সাজতে ভালবাসতো দিয়া। চোখে কাজল, ঠোঁটে লিপস্টিক, কপালে বাহারী টিপ,ম্যাচিং কানের দুল ছাড়া ও চলতই না। দিয়াই তো?
প্রেসক্রিপসান করতে গিয়ে নাম জানতে চাইলো অনীশ। দিয়াই উত্তর দিল।
– অনুসৃতা রায়।
দিয়ার পদবীও তো রায়। বিয়ের পর ও পদবী বদলাতে না পারে । কিন্তু মেয়ে তো বাবার পদবীটা ব্যবহার করবে। নাকি ওর বরের পদবীও রায়? জিজ্ঞেস করবে কিনা ভাবল অনীশ । কিন্তু ভরসা পেলাম না। দিয়ার ব্যবহার দেখে মনে হচ্ছে যেন ওর অনীশকে এই প্রথমবার দেখছে। হাত জোড় করে নমস্কার করে বিদয় নিয়েছিল দিয়া। তার আগে জিজ্ঞেস করেছিল ,”ফি কত?”
অনীশকে ভাবছিল বলবে,”তোমার থেকে টাকা নেবো দিয়া? তুমি ভাবলে কি করে? ” কিন্তু দিয়ার ভাবলেশহীন নির্লিপ্ত চোখের দিকে তাকিয়ে অনীশকে বলল,” রিসেপসনে পেমেন্ট ”।
অসম্ভব অস্বস্তি হচ্ছিল অনীশের। এটা দিয়াই। সেই চোখ-মুখ , হাঁটাচলার ভঙ্গি , গলার স্বর। মনে হচ্ছিল ছুটে গিয়ে দিয়াকে দুহাতে ঝাঁকিয়ে জিজ্ঞেস করে, ” সে কেন তাকে এতবড়ো শাস্তি দিল?”
ওয়াশ রুমে থেকে বেরিয়ে অনীশ দেখলো দশ নং পেশেন্ট বসে আছে।ইনি পরিচিত একজন বৃদ্ধ । কয়েকদিন আগে মাইক্রোসার্জারী হয়েছে। তাই চেকাআপ করাতে এসেছেন। ঘড়ির কাঁটা আটের ঘরে ছুঁতে আর পনেরো মিনিট বাকি । পেশেন্ট চলে যেতে দেবিকা ঘরে ঢুকলো।
– স্যার , ঐ নয় নং পেশেন্ট এই মোবাইলটা ফেলে চলে গেছে।
অনীশ মুখ তুলে তাকাতে দেবিকা আবার বলল,”ঐ যে স্যার, মা-মেয়ে এসেছিল। মা-টা বিধবা ।সাদা সালোয়ার পরা।”
ধক করে উঠল অনীশের বুক, ”বিধবা? তুমি জানলে কি করে?”
– স্যার, ওনাকে সবাই চেনে তো। একটা প্রাইমারী স্কুলে কাজ করে আর সন্ধ্যেবেলা রাস্তার সব বাচ্চাদের পড়ায়।
-তুমি চেনো ওনার বাড়ি।
-হ্যাঁ স্যার। ডানদিকের ফুটপাতে বড়ো অশ্বত্থগাছের নীচে যে চা-এর দোকানটা আছে, ঠিক তার পেছনের বাড়িটা।
-মোবাইলটা আমাকে দাও। আমিই দিয়ে আসি।
অবাক হল দেবিকা । গাড়িতে গন্তব্যস্থানে পৌঁছতে দুমিনিটও লাগলো না অনীশের। বেল বাজাতে বারান্দায় বেরিয়ে এল অনুসৃতা।
-ডাক্তারবাবু আপনি?
-তোমার মা আছেন?
ইতিমধ্যে দরজার তালা খুলে ফেলেছে দিয়ার মেয়ে।
– আসুন ডাক্তারবাবু ।
অনীশ ঘরে ঢুকলো । ছিমছাম ঘরে এক ধারে বোর্ড আর বসার জন্য শতরঞ্জির পাতা। অন্যদিক দুটো চেয়ার পাতা। পাশের ঘর থেকে দিয়া এসে দাঁড়াতে মেয়েটা বলল,”আমি আজ আসছি আন্টি।”
মেয়েটা বেরিয়ে যেতে অনীশ বলল,” তোমার মানে আপনার মেয়ে নয়?”
-না । আমার ছাত্রী।
-আপনি এই ফোনটা ফেলে এসেছিলেন ।
অনীশ দেখল স্মিতহাসি ফুটে উঠল দিয়ার মুখে,ঠিক আগের মতো। ” এটা ফেলে এসেছিলাম! ধন্যবাদ । এটা হারালে খুব অসুবিধে হত।”
সেই চল্লিশ বছর আগের উচ্ছ্বাস মুহূর্তের জন্য চলকে উঠে আবার শান্ত হয়ে গেল।
-এবার আসি।
কি বলবে বুঝতে পারছে না অনীশ। চল্লিশ বছর ধরে কত কিছু ভেবেছে অনীশ। অথচ আজ দিয়ার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে দিয়াকে ছুঁতে পারছে না।
পায়ের ওজন যেন দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। তবুও চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো অনীশ। বাঁদিকের বুক পকেটে ফোনটা বেজে উঠল । মেয়ের ফোন।
-বাবা , আটটা বেজে গেছে তো।
– যাচ্ছি মা।
পেছন ফিরতে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ল অনীশ,”একটা কথা জিজ্ঞেস করব? ”
-বলুন।
-আপনি কি একা থাকেন? আপনার ছেলে মেয়ে?
-আমি অবিবাহিত ডাক্তার বাবু।
অনীশ চমকে উঠলো। আর কিছু না বলে পেছন ফিরল অনীশ। দরজার ডানপাশের দেওয়ালে একটা পরিচিত ফটো বড়ো করে বাঁধানো। উচ্চ মাধ্যমিকের ফর্ম ভরে ওরা ঘনিষ্ঠ কয়েক জন বন্ধু স্টুডিও তে গিয়ে ছবিটা তুলেছিল।
পেছন ফিরে দিয়ার দিকে তাকালো অনীশ। ভাবলেশহীন মুখে দিয়া তাকিয়ে আছে অনীশের দিকে।
– কোথায় ছিলিস এতদিন ? অনীশ বলতে গিয়ে থেমে গেল।বুক পকেটের ফোনটা আবার বেজে উঠল।
-হ্যালো …. যাচ্ছি মা,পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ঢুকছি।
দিয়া চাবি হাতে গ্রিলের গেটের কাছে এগিয়ে এসেছে। দিয়ার বোবা চোখের দিকে একবার দেখল অনীশ। দিয়াই তো! কিন্তু কিন্তু …. এ কোন দিয়া!
স্টিয়ারিং হাত রাখে অনীশ। বারান্দার গ্রিলের গেটে তালা দিয়ে পেছন ফিরে ঘরে ঢুকে যায় দিয়া। ঘরে ফিরে ছবিটার সামনের দাঁড়ায়। এতক্ষণ গলার কাছে আটকে থাকা দলাটা আর সামলাতে পারে না দিয়া। অঝোর চোখের জলে দুচোখ ঝাপসা, বুকের মধ্যে বাঁধভাঙা ঢেউএর প্লাবন।