
উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশেষত আই আই টি, এন আই টি’র মতো প্র্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের গবেষণার কাজে সহায়তা করতে ভারত সরকার আগামী বছরের জানুয়ারি-তে একটি বৈদ্যুতিন বা ই-পোর্টাল চালু করবে। আজ একদিনের রাজ্য সফরে এসে এন আই টি আগরতলার শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের সাথে আলোচনা করার সময় কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ বিকাশ মন্ত্রী শ্রীমতী স্মৃতি জুবিন ইরানি এই ঘোষনা করেন। ‘ই-সোধসিন্ধু’ কার্যক্রমের অন্তর্গত এই পোর্টালে উচ্চশিক্ষার বিষয়ের উপর ৯০ হাজার ই-বুক এবং দেশ-বিদেশের ১০ হাজার খ্যাতনামা জার্নাল থাকবে। পোর্টাল ব্যবহারের এই সুবিধাটি যাতে মোবাইলেও পাওয়া যায়, সেজন্য একই সময়ে মানব কল্যাণ মন্ত্রক একটি মোবাইল অ্যাপও চালু করবে বলে জানিয়েছেন শ্রীমতী ইরানি।
শিক্ষার্থীদের সামনে মানব কল্যাণ মন্ত্রকের বিভিন্ন পদক্ষেপের উপর আলোকপাত করে তিনি জানান, দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি চলতি শিক্ষা বর্ষ থেকেই বিদেশের খ্যাতনামা কোন অধ্যাপককে ‘আমন্ত্রিত অধ্যাপক’ হিসাবে ঐ প্রতিষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানাতে পারবে। আমন্ত্রিত অধ্যাপক সংশ্লিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানে ১৫ দিন কিংবা পুরো সেমিস্টার ক্লাস নিতে পারেন। আমন্ত্র্রিত অধ্যাপকের নেওয়া ক্লাসগুলির অডিও-ভিস্যুয়াল রেকর্ডিং করা হবে, যাতে পরবর্তী সেমিস্টারের ছাত্র-ছাত্রীরা ঐ অধ্যাপকের নেওয়া ক্লাসের ভিডিও দেখে উপকৃত হয়।। ‘গিয়ান’ অর্থাৎ গ্লোবাল ইনিসিয়েটিভ অব একাডেমিক নেটওয়ার্ক কার্যক্রমের অধীনে এই সুবিধা ছাত্রছাত্রীরা নিতে পারবে। এর জন্য ছাত্রছাত্রীদের অতিরিক্ত কোন খরচ দিতে হবে না, পুরো ব্যয় বহন করবে কেন্দ্রীয় সরকার। এবছরই যাতে এনআইটি এই সুযোগ নিতে পারে এজন্য তিনি উদ্যোগ গ্রহনের জন্য এনআইটি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান রাখেন।
‘উন্নত ভারত অভিযান’ নামে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি বৃহত্তর কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে শ্রীমতী ইরানি এবিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের অবগত হতে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এই অভিযানের অধীনে এন আই টি’র মতো উচ্চশিক্ষা প্র্রতিষ্ঠানগুলি তাদের প্র্রতিষ্ঠানের পার্শ্ববর্তী এলাকার ৫টি গ্রামে সামাজিক ও শৈক্ষিক পরিবর্তনের জন্য কাজ শুরু করতে পারে। এই প্রতিষ্ঠানগুলির গবেষণামূলক ও উদ্ভাবনী কাজ, যা গ্রামীন এলাকার জনগণের জীবনমান উন্নত করতে সহায়ক, সেগুলি ঐসব গ্র্রামে প্রয়োগ করতে পারে। এটা ছাত্রছাত্রীদের ক্লাসরুম পাঠের অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
উত্তরপূর্বাঞ্চলের এন আই টি-গুলিকে নিয়ে একটি যৌথ বৈঠক আয়োজনের জন্য শ্রীমতী ইরানি এদিন এন আই টি’র বোর্ড অব গভর্নরস্ -এর চেয়ারম্যান ড. ডি পাঠককে নির্দেশ দেন। এনআইটি আগরতলা এই বৈঠকের আয়োজন করতে পারে ভরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অভিমত দেন। ড. পাঠক এতে সম্মত দিয়েছেন বলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন। এনআইটি’র ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ও পরিকাঠামো নিয়ে পর্যালোচনা করাই ঐ সম্মিলিত বৈঠকের মূল লক্ষ্য। অদূর ভবিষ্যতে এনআইটি’র ছাত্রছাত্রীদের কাউন্সিল বা প্রতিনিধিদের সাথে তিনি মতবিনিময় করবেন বলে শ্রীমতী ইরানি জানিয়েছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রীমতী ইরানি এদিন এনআইটি’র বিভিন্ন ল্যাব ও ছাত্রাবাস পরিদর্শন করেন।
তিনি আজই আগরতলা পৌঁছে এনআইটি পরিদর্শনে যান। পরে উত্তরপূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির সাথে নতুন শিক্ষানীতি নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে পর্যালোচনা করবেন। মণিপুর, সিকিম ও ত্রিপুরার শিক্ষামন্ত্রী এবং অন্য রাজ্যগুলির শিক্ষা দপ্তরের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা এই পর্যালোচনা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন।