Pro-MASS News Bureau: Dec 15, 2015:
ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তরের সর্বশেষ পূর্বাভাষ অনুসারে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্যের আকাশ প্রধানত মেঘাচ্ছন্ন, আর্দ্র ও শুষ্ক থাকবে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা নিম্নমুখী থাকবে এবং যথাক্রমে ২০ থেকে ২৫ এবং ১১ থেকে ১৪ ডিগ্রী পর্যন্ত পরিবর্তিত হতে পারে। এই সময়ে বাতাস প্রধানত উত্তর-পূর্ব দিক থেকে গড়ে প্রতি ঘন্টায় ৩কিমি বেগে বয়ে যেতে পারে। আর্দ্রতা ৩০ থেকে ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত পরিবর্তিত হতে পারে।
এই সময়ের জন্য কৃষি পরামর্শ জানাচ্ছে ভারতীয় কৃষি গবেষণা পর্ষদ :-
আলু: আলু লাগানোর কাজ অবশ্যই এই পক্ষকালের মধ্যে শেষ করে নিতে হবে। আগামী কয়েকদিনে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে যা আলু লাগানোর পক্ষে সহায়ক হবে। আলু লাগানোর পর মাটির জল ধরে রাখার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। তবে আর্দ্র ও মেঘলা আবহাওয়ায় আলুতে জলদি বা নাবি ধ্বসা রোগের আক্রমন দেখা দিতে পারে। এই আক্রমণ রোধ করতে এবং আগাম সতর্কতা হিসেবে রিডোমিল বা ইন্দোফিল বা ম্যানকোজের, ২ গ্রাম প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করতে হবে। জমিতে ধ্বসা রোগের আক্রমন হয়ে গিয়ে থাকলে দেরী না করে ঔষধ স্প্রে করতে হবে এবং জলসেচ বন্ধ রাখতে হবে।
ফুলকপি, বাঁধাকপি : বর্তমান আবহাওয়ায় ফুলকপি, বাঁধাকপি ও অন্যান্য সব্জির পাতার কালো দাগ রোগ দেখা দিতে পারে। তাছাড়া টম্যাটোতেও ধসা রোগের প্রকোপ দেখা দিতে পারে। আর্দ্র ও মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়া সাথে হাল্কা বৃষ্টি এই রোগের সহায়ক। এই রোগের ফলে সব্জির ফলন কমে গিয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই রোগের হাত থেকে গাছকে বাঁচাতে ম্যানকোজেব, ২ গ্রাম প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করতে হবে এবং আগামী কিছুদিনের জন্য জলসেচ বন্ধ রাখতে হবে।
সরিষা, মসুর: রবি মরশুমে সরিষা, মসুর প্রভৃতি লাগানোর এখন উপযুক্ত সময়। আগামী কয়েকদিন ফসল লাগানো পক্ষে সহায়ক হবে।
রবি ভুট্টা: আগাছা পরিস্কার করে জমিতে ১০ কেজি হিসাবে ইউরিয়া প্রয়োগ করুন। বর্তমানের শুষ্ক আবহাওয়ায় জমিতে তষের পরিমান বজায় রাখতে জলসেচের ব্যবস্থা করুন। জমির তষ ধরে রাখতে জলসেচের পর অবশ্যই জমির মাটি ঢেকে দিতে হবে।
কলা: জমিতে তষের পরিমান করে গেলে কলা গাছের পাতায় দাগ রোগ বেশ করে দেখা দেয়। বর্তমান শুষ্ক আবহাওয়ায় তাই এই রোগের প্রাদুর্ভাবের সম্ভাবনা বেশি। জমিতে জলসেচের ব্যবস্থা করুন এবং আক্রান্ত পাতা জ্বালিয়ে দিন। আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে প্রাপিকনাজল বা সার্ফ ২ গ্রাম প্রতি লিটার জলে গুলে ২০ দিন অন্তর স্প্রে করুন।
গবাদি প্রাণী: সংকর প্রজাতির গবাদি প্রাণী বিশেষ করে অল্প বয়সের বাছুর এই শীতের সময় ডায়রিয়া রোগ দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। অতি সত্বর নিকটবর্তী পশু চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
মুরগি: ছোট মুরগির বাচ্চা শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা করতে ঘরের খোলা জানলা ঢেকে দিন এবং ২১ দিনের বা তার নিচের বয়সের বাচ্চার ঘর গরম রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
মাছ: শীতকালে মাছ কম খাদ্য গ্রহন করে। এই অবস্থায় খাদ্যের যোগান নিয়ন্ত্রণ করে মাছের উৎপাদন শতকরা ৩৭ ভাগ বৃদ্ধি সম্ভব। পুকুরে খাদ্যের যোগান বজায় রাখতে সরিষার খইল এবং চালের কুড়া সমান অনুপাতে মিশিয়ে গড়ে কানি প্রতি ৬ থেকে ৮ কেজি প্রয়োগ করুন। অতিরিক্ত সবুজ খাদ্যের যোগান দিতে পুকুরের জলে বাঁশ পুতে দিন।