বিশ্বের বিনিয়োগকারীরা তাকিয়ে ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে। কিন্তু হতাশ হতে হলো। শনিবার সেদেশের কর্মসংস্থানের তথ্য প্রকাশিত হলো, জানা গেছে পরিস্থিতি আশাপ্রদ নয়। আমেরিকার ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিসটিকস-এর তথ্য অনুযায়ী আগস্ট মাসে সে দেশে ১৭৩,০০০টি কর্মসংস্থান হয়েছে। অথচ আশা করা হয়েছিল আগস্ট মাসে ২২০,০০০টি কর্মসংস্থানের সুযোগ মার্কিন অর্থনীতিতে তৈরি হবে। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে আশাপ্রদ তথ্য না পেয়ে, বিনিয়োগকারীদের নজর এখন মার্কিন ফেড রিজার্ভ-এর বৈঠকের দিকে। আগামী ১৬-১৭ সেপ্টেম্বর এই বৈঠক হওয়ার কথা।
মার্কিন মুলুকে কর্মসংস্থানের তথ্য যদি আশাপ্রদ হতো, তাহলে বিশ্ব জুড়ে শেয়ার বাজারে চলতে থাকা টালমাতাল অবস্থা কিছুটা হরেও কাটিয়ে ওঠার সম্ভাবনা তৈরি হতো। এখন বিশেষজ্ঞদের মতে, ফেড বৈঠক শেষ না হওয়ার পর্যন্ত শেয়ার বাজারে অনিশ্চয়তা থাকবে। মার্কিন সুদনীতি যদি বিনিয়োগকারীদের হতাশ করে, তাহলে শেয়ার বাজারের অবস্থা আরও সঙ্গীন হতে পারে।
ভারতীয় শেয়ার বাজারের অনিশ্চয়তার মধ্যে অনেকে কম দামে ভাল শেয়ার কেনার সম্ভাবনাও দেখছেন। আইআইএফএল-এর বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘমেয়াদি সময়ের জন্য যারা শেয়ারে বিনিয়োগে উৎসাহী তাদের জন্য বর্তমানের শেয়ার বাজারে বেশ কিছু ব্লু-চিপ শেয়ার সস্তায় কেনার সুযোগ তৈরি হয়েছে। শেয়ার বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য হলো, ভারতীয় শেয়ার বাজারে ধস নেমেছে মূলত বিশ্ব অর্থনীতির নেতিবাচক প্রভাবে। অর্থাৎ এদের মতে, ভারতীয় অর্থনীতি খুব মজবুত যদি না-ও বলা হয়, তবুও সহজে ভঙ্গুর বলা যাবে না। কাজেই দীর্ঘমেয়াদি সময়ের জন্য শেয়ারে বিনিয়োগ করলে ‘মেওয়া ফলতে’ পারে।
ব্লু-চিপ শেয়ারগুলির মধ্যে আইআইএফএল এবং অন্য সংস্থাগুলি দীর্ঘমেয়াদি সময়ের জন্য এসবিআই-এর শেয়ার কেনার পক্ষে মত জানিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে আগামী তিন বছরের মধ্যে এসবিআই শেয়ার দর ১১৫০টাকায় পৌঁছুবে। গত ৪ সেপ্টেম্বর এই শেয়ারের দর ছিল ২২৫ টাকা (নিফটি)। মাঝারি মেয়াদের জন্য আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের শেয়ারও কেনা যেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত। এক্সিস ব্যাঙ্কের শেয়ার দর ৪ সেপ্টেম্বর ৪৬৮ টাকায় নেমে এসেছে। তবে এই ব্যাঙ্কের আর্থিক লেনদেনের তথ্য বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞদের ধারণা এই শেয়ারের দর ৬৫০ টাকা পর্যন্ত উঠবে।
এছাড়া টাটা মোটরস, লারসেন টারবু এবং অরবিন্দ ফার্মা-র শেয়ারও ভালো রিটার্ন দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে, এটা বলে রাখা দরকার, এই ব্লু-চিপ শেয়ার গুলিকে বিশেষজ্ঞরা বিনিয়োগের জন্য লাভজনক বলে মনে করছেন। যারা ডে-ট্রেডিং বা ফিউচার-অপসনের জন্য টাকা খাটাবেন, তাদের জন্য এই আলোচনা কার্যকর নয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে শেয়ার বাজারে শেয়ার কেনার আগে বিনিয়োগকারী, বিশেষ করে খুচরো সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আগে থেকে কতটা ক্ষতির বোঝা সহ্য করা সম্ভব সেটা বুঝে সেইমতো ‘স্টপ লস’ ঠিক করে বিনিয়োগ করা উচিত।
(এই আলোচনা অনুযায়ী শেয়ার কেনাবেচা করে লাভ-লোকসানের জন্য প্রো-মাস দায়ী নয়)