কেন্দ্রীয় সরকার ‘প্রধানমন্ত্রী খনি ক্ষেত্র কল্যাণ যোজনা’ (পি.এম.কে.কে.কে.ওয়াই.) শুরু করার কথা সেপ্টেম্বর ১৭ তারিখে ঘোষণা করেছে। নতুন এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য হল, খনি সংক্রান্ত কাজকর্মের দরুন ক্ষতিগ্রস্ত সেই এলাকা ও সেখানকার মানুষের কল্যাণের জন্য ডিস্ট্রিক্ট মিনারেল ফাউন্ডেশনের তহবিল কাজে লাগানো। এ প্রসঙ্গে, কেন্দ্রীয় খনি ও ইস্পাত মন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র সিং তোমর বলেন, পি.এম.কে.কে.কে.ওয়াই. একটি বৈপ্লবিক ও অভূতপূর্ব কর্মসূচি। এই কর্মসূচি খনন সংক্রান্ত কাজকর্মের ফলে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সেই এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে ব্যাপকভাবে সাহায্য করবে।
এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য হল – খনন সংক্রান্ত কাজকর্মের দরুন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমূলক প্রকল্প ও উদ্যোগ রূপায়ণ করা; খননকার্য চলার সময় ও কাজকর্ম শেষ হবার পর সেই এলাকার পরিবেশ ও সেখানকার মানুষের স্বাস্থ্য ও আর্থ-সামাজিক অবস্থার ওপর বিরূপ প্রভাব কমানো এবং খনি এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য দীর্ঘস্থায়ী ভিত্তিতে ধারাবাহিক জীবন-জীবিকার নিশ্চিত সুবিধা প্রদান করা। জীবনযাপনের মানোন্নয়নেও সবরকম ব্যবস্থা গ্রহণের কথা ঐ কর্মসূচিতে বলা হয়েছে। ডিস্ট্রিক্ট মিনারেল ফাউন্ডেশনের তহবিল থেকে অন্ততপক্ষে ৬০ শতাংশ অর্থ পানীয় জল সরবরাহ, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, স্বাস্থ্য বিধান, শিক্ষা, কর্মমুখী দক্ষতা উন্নয়ন, মহিলা ও শিশু কল্যাণ, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের স্বার্থ সুরক্ষা এবং পরিবেশ সংরক্ষণের মতো উচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ক্ষেত্রগুলিতে খরচ করার জন্য বলা হয়েছে। বেঁচে থাকার এক সহায়ক ও অনুকূল বাতাবরণ গড়ে তোলার জন্য তহবিলের বাকি অর্থ সড়ক, সেতু, রেল, জলপথ, সেচ সুবিধা ও বিকল্প শক্তির উৎস অনুসন্ধান খাতে ব্যয় করা হবে। আর এভাবেই সরকার সমাজের অনগ্রসর, আদিবাসী ও বনবাসী মানুষজনকে সমাজের মূলস্রোতের সঙ্গে সামিল করার উদ্যোগ নিয়েছে। কারণ, সমাজের এই শ্রেণীর মানুষরাই খনি সংক্রান্ত কাজকর্মের দরুন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।
উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ২০১৫ সালের খনি ও খনিজ (উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ) সংশোধনী আইনে খনি সংক্রান্ত কাজকর্মের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ সমস্ত জেলায় ‘ডিস্ট্রিক্ট মিনারেল ফাউন্ডেশন’ গঠন করা বাধ্যতামূলক হয়েছে। ডিস্ট্রিক্ট মিনারেল ফাউন্ডেশনের তহবিলে খনি কর্তৃপক্ষ বা মালিক পক্ষের অবদানের হার কি হবে, তা কেন্দ্র আজ প্রকাশ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী খনি ক্ষেত্র কল্যাণ যোজনা রূপায়ণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ১৯৫৭ সালের খনি ও খনিজ উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ আইনের ২০-ক ধারার আওতায় রাজ্য সরকারগুলিকে নির্দেশ পাঠিয়েছে এবং ডিস্ট্রিক্ট মিনারেল ফাউন্ডেশনের তহবিলের জন্য যে নিয়মনীতি রয়েছে, সেগুলিকেও ১৯৫৭ সালের ঐ আইনের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে। ডিস্ট্রিক্ট মিনারেল ফাউন্ডেশনগুলিকেও তাদের কাজ কর্মে পুরোপুরি স্বচ্ছতা বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে, বিভিন্ন কর্মসূচি ও প্রকল্প সম্বন্ধে নিয়মিত রিপোর্ট পেশ করার জন্যও বলা হয়েছে।