ProMASS News Bureau: Feb 24, 2016:
আবহাওয়া দপ্তরের সর্বশেষ পূর্বাভাষ অনুসারে ২৬ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত সারা রাজ্যের আকাশ প্রধানত মেঘাচ্ছন্ন ও হাল্কা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এই সময়ে মোট ২৭ মিমি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকবে এবং যথাক্রমে ৩০ থেকে ৩২ এবং ১৮ থেকে ২১ ডিগ্রি পর্যন্ত পরিবর্তিত হতে পারে। এই সময়ে বাতাস প্রধানত দক্ষিণ পূর্ব দিক থেকে গড়ে প্রতি ঘন্টায় ৫ কিমি বেগে বয়ে যেতে পারে। আর্দ্রতা ৩৬ থেকে ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত পরিবর্তিত হতে পারে।
এই সময়ের জন্য কৃষি পরামর্শ হিসাবে ভারতীয় কৃষি গবেষণা পর্ষদ (ICAR) জানায়,
বরো ধান: চারা মূল জমিতে লাগানোর ১০ থেকে ১৫ দিনের মাথায় আগাছা তুলে নিতে হবে। চাপান সার হিসাবে ইউরিয়া কানি প্রতি ৫ কেজি প্রয়োগ করতে হবে। জমিতে ২ থেকে ৩ সেমি জল ধরে রাখতে হবে। গাছ হলুদ হয়ে গেলে ইউরিয়া কানি প্রতি ১০ কেজি হিসাবে প্রয়োগ করতে হবে। এই সময় হলুদ মাজরা পোকার আক্রমনের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিরোধে ফিপ্রনিল ২ গ্রাম প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করতে হবে।
আলু: যত্ম সহকারে আলু সংগ্রহ করতে হবে। লক্ষ্য রাখবেন আলু তোলার সময় যাতে আলু কেটে না যায়। আলু সংগ্রহের পর মাঠে স্তুপাকারে জমা করতে হবে যাতে করে আলুর চামড়া পুরো হয়। সংগৃহিত আলুর আকৃতি অনুসারে তিনটি ভাগে ভাগ করতে হবে। সবচাইতে ছোট আকৃতির আলু পরবর্তী সময়ে লাগানোর জন্য হিমঘরে মজুত করতে হবে।
রবি ভুট্টা: জমির স্বাভাবিক তষ নিয়ন্ত্রণ করতে জলসেচের ব্যবস্থা করতে হবে। তষের পরিমান কমে গেলে তা ফলনে ব্যাঘাত ঘটাবে। জলসেচের পর মাটি অবশ্যই ঢেকে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এই সময়ে ভুট্টায় কান্ড পচা রোগ দেখা দিতে পারে। প্রতিকারে ম্যানকোজেব ২ মিলি প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করতে হবে।
রবি মরশুমে সর্ষে ইত্যাদি: ফসল সংগ্রহের সময় হয়ে গিয়েছে। সকালের দিকে যখন আবহাওয়ায় আর্দ্রতা বেশি থাকে তখন শষ্য সংগ্রহ করা উচিত। রোদে বা বেশি শুষ্ক আবহাওয়ায় সংগ্রহের সময় ঝড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
কলা: উঁচু বা মধ্যম উঁচু জমিতে বৃষ্টিপাত না থাকার দরুন তষের পরিমান মারাত্মকভাবে হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অনতিবিলম্বে জলের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে তার আগে গাছের নিচ ভালো করে পরিস্কার করে বেসিন বানিয়ে তাতে গোবর সার প্রয়োগ করতে হবে। এক জায়গায় দুই বা তিনের বেশী চারা গাছ থাকলে তা সরিয়ে ফেলতে হবে।
গ্রীষ্মকালীন বেগুন ও টমেটো: ভালো এবং রোগমুক্ত চারা মূল জমিতে লাগানোর পর হাল্কা জলসেচের ব্যবস্তা করতে হবে।
গবাদি পশু: দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টিপাত না থাকার দরুন বাইরে সবুজ ঘাসের অভাব রয়েছে। আপনার গাভীর উৎপাদন ও স্বাস্থ্য বজায় রাখতে তাই এই সময় চিটা গুর ও ইউরিয়া মিশ্রিত খড় খাওয়ান।
মাছ: পুকুরে এক থেকে দেড় মিটার জলস্তর নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
শুকর: দেশের বিভিন্ন অংশ থেকে সোয়াইন ফ্লু বা শুকরের জ্বরের খবর পাওয়া যাচ্ছে, যদিও এই রাজ্যে এখনও তেমন কোন খবর নেই কিন্তু সাবধান হওয়া একান্ত প্রয়োজন। কারণ এই রোগ একবার হয়ে গেলে ঠেকানো যথেষ্ঠ কষ্টকর। এটি একটি ভাইরাস ঘটিত রোগ যা সাধারনত ছোয়াছোয়ির মাধ্যমে ছড়ায়। শুকরের ঘরে কর্মরত মানুষের পোষাক, শুকরের খাওযা, জিনিসপত্র বা সামনে দিয়ে চলমান গাড়ির মাধ্যমে এই রোগ ছড়াতে পারে।
অস্বাভাবিক জ্বর (১০৪ থেকে ১০৫ ডিগ্রী), চামড়ার দাগ, কোস্টকাঠিন্য তারপর ডায়রিয়া সাথে বমি, খিদে কমে যাওয়া এও রোগের প্রারম্ভিক লক্ষণ। এই রোগের ফলে অন্তসত্তা পশুর গর্ভ নষ্ট হয়ে যেতে পারে বা মৃত বা দুর্বল বাচ্চা প্রসব হওয়ার সন্তবনা থাকে। শুকরের দেহে এই সমস্ত লক্ষন দেখা দিলে বিনা দেরিতে নিকটবর্তী পশু হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে। এই রোগ ঠেকানোর একমাত্র উপায় হল সাবধানতা। শুকরের ঘরের ভিতর ও চারিদিক পরিস্কার রাখুন এবং নিয়মিত পটাশিয়াম পারমেঙ্গানেট এক চিমটে এক বালতি জলে গুলে ঘর ধুঁয়ে দিতে হবে এবং সাথে ভিতর ও বাইরে চুন প্রয়োগ করতে হবে।