ProMASS News Bureau: Mar 4, 2016:
আবহাওয়ার পূর্বাভাষ ও কৃষি পরামর্শআগরতলা, ৩ মার্চ, ২০১৫আবহাওয়া দপ্তরের সর্বশেষ পূর্বাভাষ অনুসারে ৬ মার্চ পর্যন্ত সারা রাজ্যের আকাশ প্রধানত পরিস্কার ও শুষ্ক থাকবে। এই সময়ে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। দিন ও রাতের তাপমাত্রা এক দুই ডিগ্রী বৃদ্ধি পেতে পারে এবং যথাক্রমে ৩৪ থেকে ৩৫ এবং ১৭ থেকে ১৯ ডিগ্রি পর্যন্ত পরিবর্তিত হতে পারে। এই সময়ে বাতাস প্রধানত দক্ষিণ পূর্ব দিক থেকে গড়ে প্রতি ঘন্টায় ৬ কিমি বেগে বয়ে যেতে পারে। আর্দ্রতা ২৮ থেকে ৯৮ শতাংশ পর্যন্ত পরিবর্তিত হতে পারে।
এই সময়ের জন্য কৃষি পরামর্শ হিসাবে ভারতীয় কৃষি গবেষণা পর্ষদ জানায়,
বরো ধান: জমিতে ৪ থেকে ৫ সেমি জল ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। শ্রীপদ্ধতিতে লাগানো জমিতে ন্যুনতম জল স্তর ধরে রাখা একান্ত প্রয়োজন। এই সময় হলুদ মাজরা পোকার আক্রমনের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিরোধে ফিপ্রনিল ২ গ্রাম প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করতে হবে।
বরবটি: আলু সংগ্রহের পর বরবটি লাগানোর জন্য মাটি ভালো করে চাষ করে নিয়ে ৪ কেজি প্রতি কানি হিসাবে গোবর সার প্রয়োগ করতে হবে। বীজ ৩৫ সেমি ব্যবধানে রোপন করতে হবে এবং হাল্কা জলসেচের ব্যবস্থা করতে হবে। চাষ ছাড়া লাগাতে গেলে গ্লায়ফচেট প্রয়োগ করে পুরোনো শষ্যের অবশিষ্ঠ নষ্ঠ করে নিতে হবে। সঠিক জাত নির্বাচন করতে হবে এবং রোগমুক্ত বীজ বপন করতে হবে। কিছু নির্বাচিত জাত হল মহারাজা, কাশি কাঞ্চন।
রবি ভুট্টা: জমির স্বাভাবিক তষ নিয়ন্ত্রণ করতে জলসেচের ব্যবস্থা করতে হবে। তষের পরিমান কমে গেলে তা ফলনে ব্যাঘাত ঘটাবে। জলসেচের পর মাটি অবশ্যই ঢেকে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এই সময়ে ভুট্টায় কান্ড পচা রোগ দেখা দিতে পারে। প্রতিকারে ম্যানকোজেব ২ মিলি প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করতে হবে।
সবুজ ছোলা: সরিষা সংগ্রহের পর চানা বা মটরের জন্য মাটি ভালো করে চাষ করে নিয়ে ৪ কেজি প্রতি কানি হিসাব গোবর সার প্রয়োগ করতে হবে। বীজ ৩৫ সেমি ব্যবধানে রোপন করতে হবে এবং হাল্কা জলসেচের ব্যবস্থা করতে হবে। চাষ ছাড়া লাগাতে গেলে গ্লায়চেট প্রয়োগ করে পুরোনো শষ্যের অবশিষ্ঠ নষ্ট করে নিতে হবে। সঠিক জাত নির্বাচন করতে হবে এবং রোগমুক্ত বীজ বপন করতে হবে। কিছু নির্বাচিত জাত হল চানা, টি ৯, পন্থ উরদ ৩৫, সবুজ মটর: পি ডি এম ১৩৯ (সম্রাট), টি এম ভি ৩৭।
কলা: উঁচু বা মধ্যম উঁচু জমিতে বৃষ্টিপাত না থাকার দরুন তষের পরিমান মারাত্মকভাবে হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অনতিবিলম্বে জলের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে তার আগে গাছের নিচ ভালো করে পরিস্কার করে বেসিন বানিয়ে তাতে গোবর সার প্রয়োগ করতে হবে। এক জায়গায় দুই বা তিনের বেশী চারা গাছ থাকলে তা সরিয়ে ফেলতে হবে।
গ্রীষ্মকালীন বেগুন ও টমেটো: ভালো এবং রোগমুক্ত চারা মূল জমিতে লাগানোর পর হাল্কা জলসেচের ব্যবস্তা করতে হবে।
গবাদি পশু: তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা দুই-ই উর্ধমুখী, এই অবস্থা গবাদি প্রানীদের জন্য অস্বস্থিকর। এই অবস্তায় গবাদি প্রানীদের রাতের দিকে বেশি করে খাদ্য দিন অথবা শেষ বেলায় অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা অবস্থায় মাঠে চড়তে দিন এবং যতটা সম্ভব সবুজ খাদ্য দিন।
সকাল ও বিকেলে দুধ সংগ্রহের পর যথেষ্ঠ পরিমানে প্রোটিন ও খনিজ লবনের মিশ্রন খেতে দিন এবং তা অবশ্যই ছাড়ায়।
বেশী বড় ঘাস সরাসরি খেতে না দিয়ে তা ছোট ছোট করে কেটে খানিকটা ভিজিয়ে খেতে দিন। এতে খাদ্য গ্রহন ও শজম দুই-ই আপনার প্রানীর জন্য আরামদায়ক হবে।
মাছ: পুকুরে এক থেকে দেড় মিটার জলস্তর নিয়ন্ত্রণ করতে হবে
শুকর: দেশের বিভিন্ন অংশ থেকে সোয়াইন ফ্লু বা শুকরের জ্বরের খবর পাওয়া যাচ্ছে, যদিও এই রাজ্যে এখনও তেমন কোন খবর নেই কিন্তু সাবধান হওয়া একান্ত প্রয়োজন। কারণ এই রোগ একবার হয়ে গেলে ঠেকানো যথেষ্ঠ কষ্টকর।
এটি একটি ভাইরাস ঘটিত রোগ যা সাধারনত ছোয়াছোয়ির মাধ্যমে ছড়ায়। শুকরের ঘরে কর্মরত মানুষের পোষাক, শুকরের খাওযা, জিনিসপত্র বা সামনে দিয়ে চলমান গাড়ির মাধ্যমে এই রোগ ছড়াতে পারে।
অস্বাভাবিক জ্বর (১০৮ থেকে ১০৫ ডিগ্রী), চামড়ার দাগ, কোস্টকাঠিন্য তারপর ডায়রিয়া সাথে বমি, খিদে কমে যাওয়া এও রোগের প্রারম্ভিক লক্ষণ। এই রোগের ফলে অন্তসত্তা পশুর গর্ভ নষ্ট হয়ে যেতে পারে বা মৃত বা দুর্বল বাচ্চা প্রসব হওয়ার সন্তবনা থাকে। শুকরের দেহে এই সমস্ত লক্ষন দেখা দিলে বিনা দেরিতে নিকটবর্তী পশু হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে।
এই রোগ ঠেকানোর একমাত্র উপায় হল সাবধানতা। শুকরের ঘরের ভিতর ও চারিদিক পরিস্কার রাখুন এবং নিয়মিত পটাশিয়াম পারমেঙ্গানেট এক চিমটে এক বালতি জলে গুলে ঘর ধুঁয়ে দিতে হবে এবং সাথে ভিতর ও বাইরে চুন প্রয়োগ করতে হবে।