
তবে শীতকালে মিষ্টি স্বাদে আমাদেরকে মজিয়ে রাখে খেজুর রস, পাটালি গুড় । শহর ছেড়ে যদি গ্রামের পথে যাওয়া যায় দেখা যাবে খেজুর গাছগুলোর গলায় মাটির হাড়ি বাঁধা। আসলে গাছগুলোর বক্ষবিদীর্ণ করে হাড়িগুলোকে ঝুলিয়ে রাখা হয় সারা রাত। শীতের রাতে অশ্রুর মতো টপটপ করে বুকফাটা রসে ভরে ওঠে মাটির হাড়ি। রাত ভোর হবার আগেই নামিয়ে আনা হয় এই রস। আহা ! কি তার স্বাদ ! একেই কি বলে অমৃত? হাড়ি থেকে নামিয়ে মুখে ঢালামাত্র হিমশীতল সুধারস জিভকে তৃপ্ত করে গলায় যখন গড়িয়ে পড়ে কি তার অনুভূতি!প্রাকৃতিক ‘কোল্ডড্রিংক’। ততক্ষণে অস্থায়ী উনুন থেকে গলগল করে ধোঁয়া বের হচ্ছে। বড় পাত্রে সংগৃহীত হাড়িগুলো থেকে ঢেলে নেওয়া হয় রস। ক্রমাগত জ্বাল দিতে দিতে তৈরী হয় খেজুর গুড়। তরল অবস্থায় যা নলেন গুড়,জমাট অবস্থায় তা পাটালি। তারপর আর কিছু নয়, শুধু খাওয়া….দুধে–ভাতে,রুটি দিয়ে ,মুড়ির সাথে অথবা শুধু এক টুকরো মুখে ফেলে–যেন মুখশুদ্ধি! অঘ্রাণের ধান গোলায় উঠে গেছে। হয়ে গেছে নবান্ন। সূর্য থেকে চলকে পড়া আলতো রোদে তখন পায়েস–পিঠের সুগন্ধ। সেখানে নলেন–পাটালির সদর্প উপস্থিতি। মিষ্টির দোকানে রসগোল্লা,সন্দেশ সবেতেই চলতে থাকে ছানা–গুড়ের যুগলবন্দী।