
ProMASS News Bureau: Teliamura Circle: Aug 27, 2016: দিন পনেরো আগে অশান্ত জম্মু-কাশ্মীরে নিরাপত্তার কারণে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে রাজ্যে কর্মরত সি আর পি এফ-এর ৭১, ১৪০, ১২৪–এই তিনটি ব্যাটেলিয়ন-এর প্রায় ৩০০ জন জওয়ান জম্মু ও কাশ্মীরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ফলে রাজ্যে সি আর পি এফ জওয়ানের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ইতিমধ্যে, ২৩ আগষ্ট আই পি এফ টি-র মিছিলকে কেন্দ্র করে আগরতলা শহরে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তা ঠেকাতে ও শহরে শান্তির পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সি আর পি এফ-কেই বিশেষ টহলদারির দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই দুয়ের ফলে জাতীয় সড়কের নিরাপত্তা ব্যবস্থার লাগাম অনেকটাই হালকা হয়ে গেছে| তথ্যভিজ্ঞ মহল মনে করছে, শীঘ্রই জাতীয় সড়কের ঢিলেঢালা নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনা দরকার| রাজধানীতে গৃহীত আপৎকালীন অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ক্ষুন্ন না করেই তা করা যেতে পারে, এবং সেরকম বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছেও|
উল্লেখ্য: তেলিয়ামুড়ার চাকমাঘাট থেকে মুঙ্গিয়াকামী সহ জিওলছড়া, গন্ডাছড়া ও ধলাই জেলার বিভিন্ন এলাকা সহ আসাম-আগরতলা জাতীয় সড়কের নিরাপত্তার দায়িত্বে (আর ও পি) রয়েছে সি আর পি এফ-এর ৭১ ব্যাটেলিয়ন। জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনায় উদ্ধার কাজ পরিচালনা, সুরক্ষা সহ একাধিক দায়িত্ব সি আর পি এফ জওয়ানদের ওপরই| কেন্দ্রীয় এই আধা সামরিক বাহিনীর এক কর্মকর্তার মতে, আঠারোমুড়া, মুঙ্গিয়াকামী, ৪৩ মাইল, ৩৬ মাইল, জিওলছড়া ইত্যাদি এলাকায় আর ও পি-র দায়িত্ব পালনে প্রয়োজনের তুলনায় হাতে থাকা জওয়ানের সংখ্যা অনেক কমে গেছে| এটা ঝুঁকির হলেও, তা নিয়েই সামলাতে হচ্ছে, জানান ওই কর্মকর্তা|

আগরতলা শহরে শান্তি-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সি আর পি এফ-এর উপর বিশেষ টহলদারির দায়িত্ব বর্তেছে | জানা গেছে, এই জোয়ানদের শহর ও শহরের কাছাকাছি থাকা বাহিনীর কোন ব্যাটালিয়ন থেকে আনা হয়নি| তাঁরা আসছেন বড়মুড়া পাহাড়ের পাদদেশে ৭১ ব্যাটেলিয়ন সদর কার্যালয় থেকে| আগরতলা থেকে দীর্ঘ ৮০ কিমি দূরত্ব থেকে আসছেন প্রতিদিন| সকাল ৭টা নাগাদ বাসে রওয়ানা হয়ে, পাহাড়ি ও সমতল রাস্তা পাড়ি দিয়ে এসে ওই ৯০ জন জওয়ান এবং নিরাপত্তা আধিকারিকরা আগরতলা শহরে টহলদারির দায়িত্ব পালন করছেন এবং সারা দিন ও রাত ধরে টহলদারি করে নিজেদের ডেরায় ফিরতে ফিরতে প্রায় মধ্য রাত্রি। পরের দিন ভোর হতে না হতেই নিয়মমাফিক ব্যক্তিগত ও পেশাগত কর্তব্য পালনের পর আবার সকাল ৭ টায় রওয়ানা আগরতলার উদ্দ্যেশ্যে | এভাবেই চলছে তাদের টহলদারির দায়িত্ব। তথ্যাভিজ্ঞ মহলের মতে, যথেষ্ঠ সময়ের জন্য বিশ্রামের সুযোগ পাচ্ছে না বলে জওয়ানদের উপর শারীরিক ও মানসিক ধকল যাচ্ছে|
তথ্যভিজ্ঞ মহলের মতে, চাকমাঘাট ও মুঙ্গিয়াকামী থেকে সি আর পি এফ-এর জওয়ানদের তুলে না এনে, খয়েরপুর, গোকুলনগর, জিরানিয়া থেকে টি এস আর এবং বুদ্ধমন্দিরস্থিত আসাম রাইফেলস-এর জওয়ানদের আগরতলায় টহলদারির কাজে লাগানো যেত। কিম্বা আগরতলার কাছেই রয়েছে সি আর পি এফ-এর গ্রুপ সেন্টার সেক্টর এবং আছে জিরানীয়ার খুমলুঙ-এ। কিন্তু এইসব স্থানের জওয়ানদের আগরতলায় টহলদারিতে তেমনভাবে ব্যবহার করা হয় নি। অনেকের মতে, চাকমাঘাট কিংবা মুঙ্গিয়াকামী থেকে জওয়ানদের তুলে আনায় একদিকে যেমনি জ্বালানির খরচ সহ অন্যান্য খরচ বেড়েছে, তেমনি আসাম-আগরতলা জাতীয় সড়কে আর ও পি-র কাজও অংশত বিঘ্নিত হচ্ছে|
জাতীয় সড়কে যাতায়াত করেন এমন কয়েকজন যাত্রী ও লরি চালক হালকা ভাবে মন্তব্য করেছেন, বিকেলের দিকে আসা-যাওয়ার পথে হাতে গোনা কয়েকজন জওয়ানকে দেখা গেছে, তাও দু-এক জায়গায়| জাতীয় সড়কে এখন তো বোধহয় টহলদারির প্রয়োজন-ও নেই, নির্দ্বিধায় বলেন এক যাত্রী|
কিন্তু সাবধানের তো মার নেই, তাই বলেই তো জাতীয় সড়কে আছে আর ও পি | আচমকা নিরাপত্তার আঁটুনি আলগা হলে একটু তো দুর্ভাবনা হয়ই, মন্তব্য এক লড়ি চালকের|