Paramita Gharai
January 13, 2018: Click on links for পর্ব ১ , পর্ব ২ , পর্ব ৩
ইতিহাসের পাতা ঘাটলে উত্তর পূর্ব ভারত আর তার আশপাশের অঞ্চলে অষ্ট্রিক পরিবারভুক্ত মনখেমরদের দেখা মিলবে। মনখেমররা মূলতঃ কাস্পিয়ান ,অস্ট্রেলয়েড ও আলপাইন এর বৈশিষ্ট্য নিয়ে একটি মিশ্র জাতি। দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ায় মনখেমর পরিবারভুক্ত বিভিন্ন গোষ্ঠীর বাস। খেমর সংস্কৃতির সঙ্গে বঙ্গীয় আর দক্ষিণভারতীয় সংস্কৃতির অপূর্ব মেলবন্ধন কম্বোডিয়ার শিল্পশৈলীতে। কম্বোডিয়ায় দক্ষিণভারতীয় সংস্কৃতির জয়যাত্রা শুরু সম্ভবতঃ ৮০২-৮৫০ খ্রীস্টাব্দতে, যখন কম্বডিয়ার রাজা ছিলেন দ্বিতীয় জয়বর্ধন।
সমুদ্রপথে দক্ষিণভারত আর কম্বোডিয়ার বানিজ্যিক যোগাযোগ শুরু হয়েছিল খ্রীষ্টীয় বছর গণনার অনেক আগে থেকেই। ব্রাহ্মণ্য ধর্ম ভারতবর্ষ থেকে জলপথেই হয়ত পাড়ি জমিয়েছিল কম্বডিয়ায়। দক্ষিণভারতীয় ব্রাহ্মণরা ধর্মীয় চাহিদা পূরণ করতে পৌঁছে যেতেন কম্বোজে। তাঁদের সঙ্গে মহাদেবও সমুদ্রপার করে হাজির হলেন খেমরদের দেশে। কম্বোডিয়ার আঙ্করভাট মন্দির খেমরদেরই উন্নত শিল্পভাবনার পরিচয়। দুর্ধর্ষ মোঙ্গল আক্রমণে মনখেমররা আত্মরক্ষার তাগিদে পালিয়ে এসেছিল মেকং নদীর তীরের জঙ্গলঘেরা উঁচু জায়গায়। সঙ্গে এনেছিল তাদের সাংস্কৃতিক চিন্তা , শৈল্পিক নৈপুণ্য আর ধর্মবিশ্বাস।
উত্তরপূর্ব ভারতে মনখেমর গোষ্ঠীভুক্ত খাসি জাতি স্বকীয়তা বজায় রেখেই নতুন জায়গায় আধিপত্য কায়েম করে। আঙ্কোরভাট মন্দিরের সেরা স্থাপত্যের আধার বেয়নের মন্দির। মাথায় মুকুট,কান আর গলায় গয়না সহ বিশালাকার মুখমন্ডল বেয়ন মন্দিরের আকর্ষণ। খাসি উপজাতিদের হাত ধরে মনখেমর শৈলীর প্রতিফলনই ঘটেছিল তবে ঊনকোটিতে? ঊনকোটির সৃষ্টি কি বেয়নের আদলে স্মৃতিমন্দির রূপে? মৃত্যুর পর আরাধ্য দেবতার মধ্যে বিলীন হবার আকাঙ্খা মনখেমর গোষ্ঠীর ধর্মীয় বিশ্বাসে প্রতীয়মান , যার প্রকাশ ঘটেছে বেয়নের মন্দিরের ভাস্কর্যচিন্তায়। মহাদেবের মুখায়ব সৃষ্টি করে নিজের স্মৃতি মন্দির গড়ে তুলেছিল কোনো ক্ষমতাবান শিব ভক্ত এই ঊনকোটিতে?