Paramita Gharai:
ProMASS: Dec 8, 2016: আরঙ্গজেবকে খুশী করে বাংলায় খাজনা আদায়ের বরাত পেয়েছিলেন মুর্শিদকুলি খাঁ। বাংলায় সূচনা হয়েছিল নবাবী আমলের। গৌড়বাংলার উপরিভাগের নামকরণ হল তাঁরই নামে– মুর্শিদাবাদ। তারপর ইতিহাসের টানাপোড়েনে এই মুর্শিদাবাদের হাত ধরে ঘুরেছে বাংলা সহ গোটা ভারতবর্ষের ভাগ্যের চাকা। কালের গতিতে বদলে গেছে সামাজিক ,রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পটচিত্র। কিন্তু তিনশো বছরের পুরোনো ইতিহাস নিয়ে আজও নবাবী আমলের সাক্ষী মুর্শিদাবাদ জেলার কাঠালিয়া গ্রামের পোড়ামাটির পুতুল । প্রায় তিনশো বছর আগেকার নবাবী সৈন্যদের চালচলন,হাতি–ঘোড়া চড়ার আদবকায়দা ,তাদের আদত ধরে রেখেছে এই পুতুলগুলো। ধরে রেখেছে নবাবী আমলের সাধারণ মানুষের যাপিত জীবনশৈলীর খন্ডিত চিত্র–কাঁখে বাচ্চাসহ গয়লানী,যাঁতা পেষণরত গ্রাম্যবঁধু,স্নানের আগে বাচ্চাকে তেলমাখাচ্ছে এমন অবস্থায় মা এবং এমন আরো অনেক গ্রামীন ছবি। মজার ব্যাপার কেবলমাত্র সাদা ও লাল রঙের কারিগরিতেই পোড়ামাটির এই পুতুলগুলো নিঃশব্দে বাঁচিয়ে রেখেছে তিনশো বছর আগের নবাবী আমলের সাধারণ ও প্রান্তিক বাঙালী সমাজের জীবনচর্চা ।

কাঠালিয়া গ্রামের সাধন পাল একান্তে গড়ে চলেছেন এই পোড়ামাটির পুতুল। দু’ছেলের কেউই পুতুল গড়া শেখেনি বলে দুঃখ করলেন। বিশ্বায়নের বাজারে‘ বার্বি ডল’এর সাথে প্রতিযোগিতায় এই পুতুল তো ডাহা ফেল! তবুও প্রৌঢ় সাধনবাবু কিশোর দৌহিত্রকে হাতে ধরে শেখাচ্ছেল বংশানুক্রমে পাওয়া এই শিল্পকে। আশা করেন নাতির হাত ধরেই বেঁচে থাকবে নবাবী আমলের ঐতিহ্যবাহী পোড়ামাটির পুতুল। আগামী ৬,৭ ও ৮ ই জানুয়ারি কলকাতায় বাইপাশ সংলগ্ন অঞ্চল ছটমুকুন্দপুরের লোকসংস্কৃতি গ্রামে বসবে হরেককিসিমের পুতুলের মেলা । শিল্পী সাধন পালকে খুঁজে পাওয়া যাবে সেখানেই, তাঁর পুতুলদের সাথে।