বিক্রম চক্রবর্তী (অভিনেতা) – অর্ণব রাই (গাড়িচালক)
বিক্রম রাতে নাইট ক্লাবে গিয়ে নাচানাচি করে, রেমি মার্টিন ছাড়া মদ খায় না আর টেম্পোরারি প্রেমিকাকে নিয়ে রাত ২ নাগাদ ১৩০ গতিবেগে বি.এম. ডাবলু. গাড়ি চালিয়ে ঘরে ফেরে। শুটিং না থাকলে রাত দুপুর বারোটা অব্দি ঘুমায়, আর ব্রাশ করে এ.সি. চালিয়ে ফ্রুট জুস, টোস্টারে সেঁকা ব্রাউন ব্রেড এবং লাইট ফ্রায়েড এগ দিয়ে প্রাতরাশ সম্পূর্ণ করে। মাস গেলে লক্ষ সংখ্যার টাকা ঘরে ঢোকে (বোধহয় কম বললাম) নিয়মিত রুটিনে হঠাৎ বড়ো এক বাধা পড়লো। রাতে প্রেমিকার সাথে আসার সময় ‘কার অ্যাকসিডেন্ট’ হয়ে যায়। প্রেমিকার মৃত্যু হয়, বিক্রমকে বেসরকারি দামি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। তাকে দেখতে প্রায় অর্ধেক টলিউড পাড়া চলে আসে হাসপাতালে, চলে বড়ো বড়ো নেতারা। পুলিশ তার নামে প্রেমিকা (সোনিয়া চৌহান) ‘কে ‘অনিচ্ছাকৃত খুন’ এর অভিযোগে গ্রেপ্তার করে (লোক দেখানো)। শেষে সে ১০০০ টাকার বন্ডে জামিন পায়। রাতে আবার সে পার্টি করতে যায় আর আরেক মামুনি বা মামুনিগণের সাথে ‘হ্যাং আউট’ করে।
অর্ণব রাত বারোটায় ওর টালির বাড়িতে ফেরে সাহেব (প্রয়াত লোকসংগীত শিল্পী কালিকা প্রসাদ) এর গাড়ি চালিয়ে, মায়ের সাথে মাটিতে বসে ভাত খায়; তারপর একটু মায়ের সাথে গল্প করে তারপর ঘুমায়। সকাল ৬’টা তাড়াতাড়ি উঠতে হয় ডিউটি আছে যে। কোনোরকমভাবে বাসী রুটি চায়ে ডুবিয়ে খেয়ে বেড়িয়ে যায়। মাস গেলে ৮-৯ হাজার টাকা মাইনে পায় মদ খেয়ে সাহেবের গাড়ি চালাবে এটা অর্ণবের ভাবাও পাপ। তাও একদিন অর্ণবের প্রাত্যহিক জীবনচক্রেও বড়ো বাধা আসে সে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়ি অ্যাকসিডেন্ট করে, সাহেব ঘটনাস্থলেই মারা যান। ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে অর্ণবকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে ও পরেরদিন গারোদে পোরেন। আগের ঘটনার মতো তাকেও ‘অনিচ্ছাকৃত খুন’ এর অভিযোগে অভিযুক্ত করে পুলিশ। অর্ণবের মা পুরো ঘটনা শুণে কোনোরকম অটো বা বাসে থানায় আসে ছেলেকে দেখতে। সাথে আরও ৫-৬ জন আত্মীয়, বন্ধু বা পাড়ার লোক হবে হয়তো। সাহেবের পক্ষ থেকে কোনো দায় থাকেনা অর্ণবের দিকে তাকানোর। পরে মামলাটা কোর্টে ওঠে এবং এক কমদামী ও অনামী উকিল অর্ণবের হয়ে সাওয়াল করে। কিন্তু শেষরক্ষা হয় না – অর্ণবের জেল হয় বড়োলোক বিক্রমের মতো সে জামিন পায় না। অর্ণব জেলে থেকেও ভাবে আজ রাতে মা কি খাবে !!
( বিদ্র: লেখাটা আংশিক শ্রেণীচরিত্রের ভিত্তি করে লেখা হলেও এর সত্যতার তেমন কোনো দুর্বলতা আছে বলে আমি মনে করি না )
বৈষম্য কোথায় ? ‘গণতন্ত্র’ ‘গণতন্ত্র’ গন্ধ পাই।
এরপরেও আরেকটা নবারুণ হলে দোষ ?
বিদ্রোহ গাইলেও দোষ ?
(লেখাটি Whatsapp থেকে সংগৃহীত। এই লেখাটিতে প্রকাশিত দৃষ্টিভঙ্গী বা মতামত প্রোমাস-এর নিজস্ব ভাবনা নয়।)