• Contact us
  • Advertising Policy
  • Cookie Policy
  • Disclaimer
  • Privacy Policy
  • Terms of Use
Sunday, June 8, 2025
32 °c
Agartala
enewstime
  • Home
  • News
    • Northeast
    • National
    • International
    • Tripura News
  • Sports
    FIFA WC qualifiers: Colombia's Duran to miss Argentina clash; Chile loses Aravena for Bolivia duel

    FIFA WC qualifiers: Colombia's Duran to miss Argentina clash; Chile loses Aravena for Bolivia duel

    T20 Mumbai League: Mulani-led Aakash Tigers secure first win in 5-over thriller

    T20 Mumbai League: Mulani-led Aakash Tigers secure first win in 5-over thriller

    French Open: Coco Gauff fights back to stun Sabalenka, wins first title at Roland Garros

    French Open: Coco Gauff fights back to stun Sabalenka, wins first title at Roland Garros

    2nd Unofficial Test: Bad light forces early stumps, England Lions’ trail India ‘A’ by 156 runs

    2nd Unofficial Test: Bad light forces early stumps, England Lions’ trail India ‘A’ by 156 runs

    UTT Season 6: Jeet Chandra stuns Walther to power Jaipur Patriots past Ahmedabad SG Pipers

    UTT Season 6: Jeet Chandra stuns Walther to power Jaipur Patriots past Ahmedabad SG Pipers

    French Open: Coco Gauff fights back to stun Sabalenka, wins first French Open title (Ld)

    French Open: Coco Gauff fights back to stun Sabalenka, wins first French Open title (Ld)

    Athletics: Jyothi Yarraji wins in 12.99s as India claims six gold in Taiwan Open

    Athletics: Jyothi Yarraji wins in 12.99s as India claims six gold in Taiwan Open

    T20 Mumbai League: Shreyas Iyer-led Mumbai Falcons, Eagle Thane Strikers reach semis

    T20 Mumbai League: Shreyas Iyer-led Mumbai Falcons, Eagle Thane Strikers reach semis

    UTT Season 6: Rising star Yashaswini topples China’s Fan Siqi as U Mumba beat Chennai Lions

    UTT Season 6: Rising star Yashaswini topples China’s Fan Siqi as U Mumba beat Chennai Lions

  • Business
  • Entertainment
  • Health
  • Features
  • TendersNew
No Result
View All Result
  • Home
  • News
    • Northeast
    • National
    • International
    • Tripura News
  • Sports
    FIFA WC qualifiers: Colombia's Duran to miss Argentina clash; Chile loses Aravena for Bolivia duel

    FIFA WC qualifiers: Colombia's Duran to miss Argentina clash; Chile loses Aravena for Bolivia duel

    T20 Mumbai League: Mulani-led Aakash Tigers secure first win in 5-over thriller

    T20 Mumbai League: Mulani-led Aakash Tigers secure first win in 5-over thriller

    French Open: Coco Gauff fights back to stun Sabalenka, wins first title at Roland Garros

    French Open: Coco Gauff fights back to stun Sabalenka, wins first title at Roland Garros

    2nd Unofficial Test: Bad light forces early stumps, England Lions’ trail India ‘A’ by 156 runs

    2nd Unofficial Test: Bad light forces early stumps, England Lions’ trail India ‘A’ by 156 runs

    UTT Season 6: Jeet Chandra stuns Walther to power Jaipur Patriots past Ahmedabad SG Pipers

    UTT Season 6: Jeet Chandra stuns Walther to power Jaipur Patriots past Ahmedabad SG Pipers

    French Open: Coco Gauff fights back to stun Sabalenka, wins first French Open title (Ld)

    French Open: Coco Gauff fights back to stun Sabalenka, wins first French Open title (Ld)

    Athletics: Jyothi Yarraji wins in 12.99s as India claims six gold in Taiwan Open

    Athletics: Jyothi Yarraji wins in 12.99s as India claims six gold in Taiwan Open

    T20 Mumbai League: Shreyas Iyer-led Mumbai Falcons, Eagle Thane Strikers reach semis

    T20 Mumbai League: Shreyas Iyer-led Mumbai Falcons, Eagle Thane Strikers reach semis

    UTT Season 6: Rising star Yashaswini topples China’s Fan Siqi as U Mumba beat Chennai Lions

    UTT Season 6: Rising star Yashaswini topples China’s Fan Siqi as U Mumba beat Chennai Lions

  • Business
  • Entertainment
  • Health
  • Features
  • TendersNew
No Result
View All Result
enewstime
  • Home
  • News
  • Sports
  • Business
  • Entertainment
  • Health
  • Features
  • Tenders
Home Potpourri

বৃষ্টি ভিজে একদিন হঠাৎ …. (Drenched in Rain)

ENEWSTIME Desk by ENEWSTIME Desk
July 12, 2018
in Potpourri
বৃষ্টি ভিজে একদিন হঠাৎ …. (Drenched in Rain)
30
VIEWS
Share on FacebookShare on Twitter

July 12, 2018:

ADVERTISEMENT

বৃষ্টি মেখে ….

  • পারমিতা ঘড়াই

এক কলকাতা বৃষ্টি মেখে হাজির হলাম স্কুলে।
জল ছপছপিয়ে কেউ কাকভেজা, কেউ বা আধভেজা হয়ে যে যার টেবিলে হাজির। পুরো খিচুড়ির দিন, স্কুলের ভোগে গেল। বসে একটু জিরোব আর পবনদেবের সঙ্গে  আমাদের সরকারকে মন খুলে দু-চার টে ভালমন্দ  কথা শোনাব এই যখন ভাবছি , মালতী এসে ধপ করে একগাদা খাতা টেবিলের ওপর  ফেলল। আমি  সদ্য মোছা ভিজে চুলটাকে  একটা ক্লাচার দিয়ে সামলানোর কসরৎ করতে করতে থেমে গেলাম। মালতী আমার দিকে না তাকিয়ে অন্য টেবিলে যেতে বলল,”বড়দিদি আপনারে দিতে বললেন।” বুঝলাম, কাল শেষ হওয়া অঙ্ক পরীক্ষার খাতা। চেয়ারে বসে খাতাগুলো টেনে নিলাম। শ’দেড়েক খাতা। বাড়িতে বসেই দেখব। মালতী এবার চাএর কাপ রেখে গেল আমার সামনে। গরম চা এ চুমুক দিয়ে তাকালাম জানালার দিকে।

তখনো ঝমঝমঝম বৃষ্টি হচ্ছে। আকাশে বর্ষার মেঘের ক্লান্তিহীন আনাগোনা। জালনার পাশের কদম গাছটার বড় বড় পাতার ফাঁকে ফাঁকে হালকা হলুদ গোলগাল ফুলগুলো হাওয়ায় দোল খাচ্ছে। সবুজ পাতা বেয়ে গড়িয়ে পড়া মুক্তোর  দানার মতো বৃষ্টির ছল টপটপ করে ঝরে পড়ছে  গ্যারেজ টিনের চালে। সেখানে একটা ভিজেকাক  ডানা গুটিয়ে এসে বসল। একটু পরে কাকটা উড়ে এল ইলেকট্রিক তারে । এদিক সেদিক চেয়ে জালনার  গরাদ গলে সোজা হাজির হল আমার টেবিলে।

আমার দিকে তাকিয়ে ঘাড় বেঁকিয়ে বলল,”কঃ”। আমি ভুরু নাচিয়ে বললাম,”কি?”
কাকটা আবার বলল,”কঃ”। মনে হল  এত বৃষ্টি তে ভিজে বেচারার চা তেষ্টা পেয়েছে ।
বললাম,”খেতে পারো আপত্তি নেই”।
চাএর কাপে ঠোঁট ডুবিয়ে দিল কাকটা। কিছু পরে ঠোঁটটা তুলে বিশ্রীভাবে গলা উঁচিয়ে  ডানা ঝাপটে বলল,”ক্যাউ” ।
আমার দিকে তাকিয়ে বলল , ”বাঁচালে দোস্তো!বড্ড ভিজে গেছিলাম।”
আমি বললাম, ‘যাকে বলে কাকভেজা। তা বৃষ্টিতে এত ভেজাভেজির দরকার কি বাপু?”
সে খ্যাঁকখ্যাঁক করে  এমন একটা হাসি হাসল দেখে ভারী দুঃখ হল। বললাম,”কাকস্য পরিবেদনা !”
উত্তরে বলল ,”বেদনা বলে বেদনা! এই বৃষ্টির দিনে নিজের আর বৌ-বাচ্চার খাবারদাবার যোগাড় করা কি কম ঝকমারি! ” বলেই কাকটা ঠোঁট দিয়ে ডানার জল ঝেড়ে ঝুরে দুপায়ে জালনার দিকে হাঁটা লাগাল। আমি বললাম, ”ওহে চললে কোথায় এখন?”

ADVERTISEMENT

টেবিল থেকে ঝুপ করে লাফিয়ে নেমে উত্তর দিল,”আমার কি আর ঠিক আছে? এদিক সেদিক ওড়াওড়ি করে দেখি কি খাবার দাবার পাই। তোমরা তো আজকাল আবার ঝালমুড়ি খেয়ে রাস্তায় ঠোঙাটাও ফেলো না। স্বচ্ছ্ ভারত না কি একটা বলো…তাতে আমার খাটনি একটু বেড়েছে বৈকি ।” বলতে বলতে সে বারান্দার চৌকাঠ পেরিয়ে বারান্দার পাঁচিলে ওপর উঠল। এবার ডানা দুটো একবার ঝাপটে মেলে দিল শূন্যে। আমি ও ওর পা দুটো  জাপটে ধরলাম । বারান্দায় লেজ গুটিয়ে  শুয়ে থাকা  নেড়িটা  ভিরমি খেয়ে কুঁইকুঁই করে উঠল। আমিও ঝুলতে ঝুলতে দুলতে দুলতে আকাশে চলতে লাগলাম।
কাকটা চোখ পাকিয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করলো, ”মতলবটা কি? এমন জাপটে ধরলে কেন?আমি কি তোমার প্রেমিক?”
কাকটার রসবোধ দেখে চমৎকৃত হলাম ।
” না না,তা কেন?”আমি শশব্যস্ত হয়ে বলে উঠলাম।(কাকটা কি আমাকে ওর স্বগোত্রীয় ভাবছে! আমি কি এতই কালো! আমার গলার স্বর কি এতই কর্কশ!)  “কিন্তু  এই বৃষ্টিতে যে আমার বড়ো প্রেম  পাচ্ছে ।”
-তা আমি কি করতে পারি।
-দাও না আমার একটা প্রেমিক যোগাড় করে।
চোখ বুজে কি যেন ভাবল কাকটা। তারপর আমাকে বলল, “শক্ত করে ধরো আমাকে।” বলেই সে ফুলতে শুরু করল। এইসা ফোলান ফুলল যে আমি দিব্যি ওর পিঠে চেপে বসলাম ।এবার একটু ভয় ভয় করছে । জিজ্ঞেস করলাম, ”তুমি কে?”
বলল,” আমি দ্রিঘাংচু । সুকুমার বাবুর লেখায় আমাকে পাও নি? ”
আমি আউড়ালাম, ” হলদে সবুজ ওরাংওটাং/ইট পাটকেল চিৎপটাং/ মুশকিল আসান উড়ে মালি/ ধর্মতলার কর্মখালি।”
দ্রিঘাংচু বলল,”একদম ঠিক ।’ বলে সাঁ সাঁ করে তীর বেগে ওপরে উঠে গেল। এতক্ষণ ধরে স্কুলের ছাদ আর কদম গাছটার ওপর পাক খাচ্ছিলাম । এবার ওপরে উঠতেই পুরো কলকাতা শহরটা চোখের সামনে ভেসে উঠল।
মেঘের পাশে পাশে ভেসে চলেছি। কালো , সাদা , ধূসর মেঘের দল আকাশে ভাসতে ভাসতে  ফনার মতো ঢেউ তুলেই চলেছে, তুলেই চলেছে।আবার ঢেউগুলো  আছড়ে ভেঙে পড়ছে।  তাদের যা তর্জন গর্জন  কানে তালা লাগার উপক্রম। একটা মেঘের ঢেউএর ওপর ফোঁটা ফোঁটা জলকনা ছিটকে বের হচ্ছে হাওয়ার সাথে মিশবে বলে। তার বেশ কিছুটা একবার আমার গায়ে এলো, রাস্তার জমা জলের ওপর দিয়ে গাড়ি চলে গেলে ঠিক যেমন করে ভিজিয়ে দেয় অনেকটা তেমনি। কেবলমাত্র দাঁত খিচিয়ে ড্রাইভারকে গালিগালাজ করতে পারার সুখটা পেলাম না। দেখি জলের বিন্দুগুলো হাওয়ার তোড়ে   দিব্যি বৃষ্টি হয়ে গেল শহরের বুকে। সাউথ সিটির মাথার ওপর ঘুরপাক খেয়ে ভিক্টোরিয়ার দিকে উড়ে গেল দ্রিঘাংচু । বলল,”দেখলে গড়ের মাঠে ভিক্টোরিয়ার পরী কেমন নাচ করছে।”

সেখান থেকে আমাকে উড়িয়ে নিয়ে চলল  কলকাতার পশ্চিমে । জল থৈ থৈ বেহালা পেরিয়ে গেলাম ডায়মন্ডহারবার। টুকরো টুকরো মেঘের  সাথে উড়তে উড়তে ভাসতে ভাসতে হাজির হলাম সাগর সঙ্গমে।
দ্রিঘাংচু হেঁকে বলল,” এই সাগরে তোমার প্রেমিক খুঁজে পাবে না।”
বললাম, “কোথায় পাবো ?

বললাম, “কোথায় পাবো বলতো?”
দ্রিঘাংচু মুখ বেঁকিয়ে আমাকে ভেংচি কেটে বলল,”কোথায় পাব বলতো তো! একি গাছের ফল?যে গাছে ফলবে সে গাছ থেকে টুপ করে পেড়ে এনে দেব। চলো দেখি ,এতদূর এলাম যখন তখন একটু দেবদর্শন করে নেই।” বলেই সে ডানদিকে মুখ ঘোরাল।
বললাম,”চললে কোথায়?”

আমার কথার উত্তর না দিয়ে দ্রিঘাংচু বেশ জোরে জোরে ডানা নাড়তে লাগল। সমুদ্রের ওপর দিয়ে  রাশি রাশি মেঘ তেড়েফুঁড়ে চলেছে কলকাতার দিকে।ওদের আড়াআড়ি কাটিয়ে যেই না একটু ডাঙা দেখা গেল দ্রিঘাংচু নীচে নামতে শুরু করল।
– আরে, আরে , নামছো কেন? আমি যে ভিজে গেলাম।
-আমিও শুকনো আছি নাকি?মেঘের মধ্যে দিয়ে নামলে এমন  একটু ভিজতে হয়। তাছাড়া পুণ্যি করতে হলে একটু কষ্ট করতে হয় বৈকি!
-পুণ্যি! মনে মনে কথাটা বলেই সামনে দেখি জগন্নাথদেবের মন্দির । ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে আমাকে নিয়ে দ্রিঘাংচু নামল একটা গাছের ওপরে, লোকজন থেকে অনেক দূরে। আমি ওর পিঠে থেকে নামতেই ও সেই কলকাতার পাতিকাক হয়ে গেল! বলল,” আমি দর্শন করে আসছি। তুমি দেখো প্রেমিক খুঁজে পাও কিনা।” বলেই ফুড়ুৎ করে উড়ে গেল দ্রিঘাংচু ।আমি এদিক সেদিক ঘুরে বুঝলাম এটা মন্দিরের রান্নাঘর। ধুর ! এখানে তো সব রাঁধুনী বামুন। এখানে কি আর প্রেমিক পাব?

আর একটু এগোতেই বিশাল লাইন! ভারতীয় জনগনের একাংশ যেন ; এই বৃষ্টিতেও উপছে পড়ছে বিশ্বরূপ দর্শনের জন্য । যদি বৃষ্টিতে ভিজে নিউমোনিয়া হয় অথবা ভেজা চাতালে পিছলে পড়ে পা ভাঙে তাও কাফি! এক বুড়োকে কথাটা জিজ্ঞেস করেই বসলাম। বুড়ো কপালে দু হাত ঠেকিয়ে বলল,,” ছিঃ ছিঃ মা! এমন বলতে নেই। সবই  জগন্নাথদেবের  দেবের দান! ” বলেই দোক্তা খাওয়া কালো কালো দাঁতালো মাড়িশুদ্ধ বের করে আমার দিকে তাকিয়ে একগাল হাসল। আমি তাড়াতাড়ি সরতে গিয়ে এক জনের সাথে ধাক্কা খেলাম। ভাবলাম দেবতা আমার মনোবাসনা পূর্ণ করলেন বোধ হয়। তাকিয়ে দেখি, “ইসসসস্ ….” , সে একজন ধুতিপড়া টিকিনাড়া পান্ডা!  আর কেউ নেই এখানে। একে দেখে প্রেম তো পালাই পালাই করে উল্টো দিকে ছুট লাগাল। সঙ্গে সঙ্গে  আমিও ফিরে এলাম ঐ গাছ তলায়।  এসে দেখি একটা কাক ঝিমোচ্ছে । আমি তাকে ঠেলা দিয়ে বললাম,”চলো,ঘুমোচ্ছে যে বড়ো।” আমার ঠেলা খেয়ে কাকটা ভ্যাবাচাকা খেয়ে ডাল থেকে পড়ে যাচ্ছিল। পাঁচিলে ওপর বসে থাকা বেড়ালটা ফ্যাঁচফ্যাচিয়ে হেসে বলল,”ওটা দ্রিঘাংচু নয়। দ্রিঘাংচু এখন রান্না ঘরে দেবতার অন্নভোগ খাচ্ছে ।” ভ্যানিটি ব্যাগটা আমার কাঁধেই ছিল। আমি একটু সময় পেয়ে চিরুনি বের করে চুলটাকে ঠিক করে আঁচড়ে বাঁধলাম। একটা টিপ পড়লাম। ঠোঁটে ও লিপস্টিক লাগালাম। চোখে কাজল পরে সবে আয়নাটা মুখের সামনে ধরেছি, দেখি আমার মুখের ডানপাশে আর একজনের মুখ। থতমত খেয়ে পেছন ঘুরে দেখি ঠোঁটের ডানকোনের কষ দিয়ে পিক গড়ানো এক টা লোক হাসি হাসি মুখে আমাকে দেখছে। কি করব ভেবে উঠবার আগেই ‘ক্যাঃ ক্যাঃ’  শব্দ!  দ্রিঘাংচু গাছের ডালে গলা উঁচিয়ে হাসছে। আর ওকে সঙ্গত করে বেড়ালটা ও খ্যাঁচখ্যাঁচিয়ে কাশছে। তেড়ে গেলাম দ্রিঘাংচু দিকে। বলল,”প্রেমিক পেলে?” বলে আবার সেই বিশ্রী হাসি হেসে নিজেকে ফোলাতে শুরু করল । আমিও আর কোনো কথা না বলে ওর পিঠে উঠে বসলাম। দ্রিঘাংচু উড়তে শুরু করল। আমাদের দেখে ঠোঁট থেকে পিক গড়ানো লোকটা চোখ উল্টে চিৎপাত হয়ে সশব্দে পড়ে গেল।

মেঘেরা এখন বিশ্রাম নিচ্ছে । দ্রিঘাংচু তাই নিশ্চিন্তে মেঘের নীচ দিয়েই উড়ে চলেছে। পিঠের দুপাশে পা ঝুলিয়ে দিয়ে আমি চেষ্টা করছি হাওয়া লাগিয়ে ভেজা লেগিংসটাকে শুকিয়ে নিতে। যাঃ হাওয়া। ওপরে উঠেই আগে ওড়না পেচিয়ে চুলটাকে ঢেকেছি। তাই দেখে দ্রিঘাংচু আমাকে আড়চোখে দেখে বলেছে,”এত সাজগোজের কি আছে? এই আকাশে কে তোমাকে দেখছে?”

-ওমা!কেউ না দেখলে বুঝি সাজতে নেই? তাছাড়া আমি তো প্রেমিক খুঁজতে বেরিয়েছি। না সাজলে আমাকে কেউ পছন্দ করবে কেন?

-অমন প্রেমিকের মুখে আগুন! তোমার সাজ দেখে পছন্দ করবে যে মনুষ্যি  তাকে তুমি প্রেমিক মনে করো?

আমি মুখ গুঁজে কিছুক্ষণ বসে জিজ্ঞেস করলাম, ”তা এখন আমাকে কোথায় নিয়ে চললে শুনি?”

বাঁদিকে ঘাড় ঘুরিয়ে দ্রিঘাংচু  বলল,”ঐ দেখো চিল্কা হ্রদ।”

ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলাম সমুদ্রটা একটা  খাঁজে ঢুকে গেছে। আশপাশটা সবুজ। দ্রিঘাংচু কে বললাম,” দেখলাম চিল্কা । কিন্তু চিল্লিয়ে যে আমার গলা ব্যাথা হয়ে গেল। তবুও জানতে পারলাম না কোথায় যাচ্ছি ।”

ডানদিকে উঁচু লালমাটি, পাহাড় , জঙ্গল। ছোটবেলায় পড়েছিলাম দাক্ষিণাত্যের মালভূমি । আমরা  তার ওপর দিয়ে যাচ্ছি । বাঁদিকে  যতদূর চোখ যাচ্ছে নীল সমুদ্র। আরো একটু ডানদিক ঘেষে উড়ছে দ্রিঘাংচু । এখনো উত্তর পাইনি কোথায় যাচ্ছি। মেঘের ওপারে যেতে সূয্যিদেবতা বাড়ির পথে রওনা হয়েছেন সে কথা বলাই বাহুল্য ।
বললাম, “তুমি রাতেও উড়বে নাকি?”

উত্তরে বায়সমশাই বলল, “সামনে তাকাও। কি দেখতে পাচ্ছো?”
একবার দেখলাম। চোখ কচলিয়ে আবার দেখলাম। সামনে চারমিনার । একে একে নজরে এল নিজাম প্যালেস, হুসেন সাগরে দাঁড়িয়ে থাকা বুদ্ধদেবকে।
উৎফুল্ল হয়ে বললাম, ”দ্রিঘাংচু! এখানেই রাত কাটাবো তো?”
দ্রিঘাংচু গম্ভীর স্বরে বলল,”কঃ।” সঙ্গে সঙ্গে কড় কড়া কড়াৎ। ওপরের দিকে তাকিয়ে দেখি মেঘ গুলো ভীষণ কালো হয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেছে। এত দৌড়াদৌড়ি যে একে অন্যের সাথে ধাক্কা খাচ্ছে । আর তাতেই শব্দের ধমক আর আলোর চমক। খুব ভয় পেয়ে দ্রিঘাংচু কে বললাম, “কোথাও নামতে হবে আমাদের ।” দ্রিঘাংচুও বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে বলল, ”এক্ষুণি কোথাও আশ্রয় নিতে হবে। আমি একা থাকলে তো অসুবিধা ছিল না। কিন্তু তোমাকে রাখি কোথায়?” পাশ দিয়ে উড়ে যেতে একটা চিল বলল,” ফোর্টে চলে যাও। দুজনেই থাকতে পারবে। সঙ্গে সঙ্গে দ্রিঘাংচু দিক বদলে ফোর্টের দিকে উড়তে শুরু করল। খুব তাড়াতাড়ি ডানা দুটোকে এমন ওপরনীচ করতে শুরু করল যে আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করলাম।
বেশ কিছু সময় পরে দ্রিঘাংচু বলল,”নামো এবার ।” চোখ খুলে দেখি একটা বড় পাথুরে বারান্দার ওপর আমরা। দ্রিঘাংচু র পিঠ থেকে নামতে নামতে বুঝলাম এটাই গোলকন্ডা ফোর্ট। ধীর পায়ে  এগিয়ে ছুঁলাম  বারদুয়ারির গ্রানাইটের দেওয়াল। প্রায় ছ’শ বছরেরও বেশি ইতিহাসকে যখন অনুভব করব ভাবছি পেছন থেকে ‘ক্যাঁক ক্যাঁক ক্যাঁও’ করে একটার বিচ্ছিরি শব্দ এল। পেছন ঘুরে দেখি দ্রিঘাংচু আবার পাতিকাক সাইজে ফিরে গেছে। সাথে আর একটা সাগরেদ জুটিয়ে বেশ হাসাহাসি করছে। আমাকে বলল,”চেনো এনাকে? ”

আমি মনে মনে ভাবলাম, আমি কি সত্যি সত্যিই  কাক গোত্রীয় হয়ে গেলাম! মুখে বললাম,”না।” দ্রিঘাংচু বলল, “ইনি সম্পর্কে  আমার ভাই হন। আমরা একই কলম জাত কিনা তাই।”

কথাটার মাথামুন্ডু কিছু না বুঝে ভ্যাবাচাকা খেয়ে গেলাম । দ্রিঘাংচু বলল, “নমস্কার করো। ইনি কাক্কেশ্বর কুচকুচে ।” করজোড়ে নমস্কার করতে গিয়ে দেখলাম এনার নাকের ডগায় মানে গিয়ে ঠোঁটের গোড়ায় গোল ফ্রেমের চশমা লাগানো। কৌতূহল সম্বরণ করতে না পেরে জানতে চাইলাম ,”তা এখন আপনার বয়স কত?”

দ্রিঘাংচু মাঝখানে ঢুকে  মুচকি হেসে বলল,”তোমার কত চাই শুনি?” মানে ?একটা বুড়ো কাক কিনা শেষে আমার  …..! ছিঃ ! ছিঃ! চটপট ওখান থেকে  বারদুয়ারির দিকে সরে এলাম।

সামনে কালো চাদরে মোড়া পুরো হায়দ্রাবাদ শহর প্রবল বৃষ্টিতে ভিজছে। সঙ্গে বাজপড়ার শব্দ আর বিদ্যুতের ঝলক।আমার কুর্তি আর লেগিংসটা ভেজার আগেই এখানে চলে আসতে পেরেছি। তাই রক্ষে। মাথাটা ভাল করে রুমাল দিয়ে মুছলাম ।খুব ক্লান্ত লাগছিল। পাশেই একটা ঘরে ঢুকে মেঝেতে ওড়না পেতে শুয়ে পড়লাম ।

কোথায় ভাবলাম একটা খানদানী শহরে এসে হ্যান্ডসাম আশিক পেয়ে যাব , তা না হতচ্ছাড়া বৃষ্টি …। শুয়ে শুয়ে এসবই ভাবছি। হঠাৎ দেখি ঘরের কোণের দেওয়ালের খাঁজে একটা প্রদীপ জ্বলে উঠল। আমি তাকিয়ে দেখি একটি ছেলে ,পরণে চোস্ত আর চাপকান, মাথায় ফেজ, আমার দিকে অবাক হয়ে দেখছে। আলোটা পেছন দিকে থাকায় মুখটা ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। সে ওখানে দাঁড়িয়েই জিজ্ঞেস করল,”কৌন? ক্যায়সে আয়া?” উফ্! কি রোমান্টিক কন্ঠস্বর! আর কি রোমান্টিক পরিবেশ!
বললাম , “তুম কৌন?”

সে উত্তর দিল,” ম্যায় তেরা আশিক।” আমি রোমাঞ্চিত হলাম।  তাড়াতাড়ি বসলাম তাকে দেখব বলে।
ঠিক সেই সময় ,”বাহ্!ঠিক সময়েই উঠেছো দেখছি। চলো বের হতে হবে । ভোর হতে আর অল্প বাকি। বৃষ্টিও আর নেই।” দ্রিঘাংচু র গলা শুনে বুঝলাম স্বপ্ন দেখছিলাম । ধুর বাবা! মুখটা ঠিক করে দেখার আগেই ঘুমটা ভেঙে গেল!
কাকেশ্বর কুচকুচে  কাঁদো কাঁদো মুখে বিদায় জানালৌ। আকাশে উড়ে দ্রিঘাংচু আমাকে বলল, ”বড়ো দাগা দিলে তুমি ওর মনে।”

আমি শুনতে না পাবার ভান করে  দ্রিঘাংচুকে জিজ্ঞেস করলাম,  আজ তবে হায়দ্রাবাদ ঘুরে দেখছি আমরা। তাই তো ?
দ্রিঘাংচু বলল , “না । আমরা এখন চলবে রত্নাগিরির দিকে।
“কিন্তু পেটে যে ছুঁচো ডন দিচ্ছে । পুরীতে যে খেয়েছি তারপর তো আর খাবারদাবার জোটেনি ।”
দ্রিঘাংচু গম্ভীর হয়ে বলল,”কঃ”।

আমরা চলেছি মালভূমির ওপর দিয়ে। লাল পাহাড়ের গায়ে পায়ে  ভাঁজে খাঁজে ছড়িয়ে থাকা সবুজ গাছপালার ওপর সূয্যিদেবতা সবেমাত্র আলো দিতে শুরু করেছে। কিন্তু পশ্চিম পাহাড়ের থেকে যে কালো মেঘের দল হু হু করে ছুটে আসছে এদিক পানে! সঙ্গে শোঁ শোঁ হাওয়া। ”দ্রিঘাংচু ! খিদে পেয়েছে! ” কাঁচুমাচু হয়ে বললাম ।
দ্রিঘাংচু কোনো কথা না বলে দেখি তীর বেগে নীচে নামছে। কালো মেঘগুলোকে ভেদ করে নামতে নামতে ঝেঁপে বৃষ্টি এল। দুজনেই ভিজতে ভিজতে  এসে নামলাম এক পাহাড়ের মাথায়।
“এই এটা কোথায় এলে? ” চেঁচিয়ে উঠলাম।
দ্রিঘাংচু সামনের একটা গুহা মুখ দেখিয়ে দাঁত খিঁচিয়ে বলল, ” আগে ঐখানে ঢোকো!” পেট চোঁ চোঁ করছে। তার মধ্যে পুরো ভেজা। উপায় নেই। গুহাতেই ঢুকলাম। গুহাতে ভেতরে ঢুকে তো অবাক। আলো এলো কোথা থেকে? দ্রিঘাংচু ইতিমধ্যে হাঁকডাক করতে শুরু করেছে, “সম্পাতি দাদু , ও সম্পাতি দাদু!”

দেখি এক বড়সড় বৃদ্ধ পাখি  ( জাতিতে বাজ বা ঈগল) এসে দাঁড়ালো। দ্রিঘাংচু একটা পেন্নাম  ঠুকে বলল, ” এত জোর বৃষ্টি  হচ্ছে যে তোমার বাড়িতে নামতে বাধ্য হলাম ।”
বৃদ্ধ সম্পাতি হেঁ হেঁ করে বলল ,”বাহ্, বেশ ভালো করেছ নাতি। তা সঙ্গে এটি কে?”
দ্রিঘাংচু বলল, ” আমার বন্ধু । আমরা একটু পশ্চিম পাহাড়ে বেড়াতে যাচ্ছি ।”
গুহার ভেতরে কাঠকুটো জ্বেলে আগুন জ্বলছে ।আমি পাশে গিয়ে বসলাম জামা শুকানোর জন্য। বৃদ্ধ সম্পাতি খাবার দাবার নিয়ে এল ,  বিস্কুট আর চিপসের প্যাকেট। দেখে কি যে আনন্দ হল। আমাকে দেখে বলল,”এই যে ওড়না আর চুলটাকে সামলে বোসো। না হলে আমার ডানা যেমন পুড়ে গেছ গেছিল সূর্যের তেজে, তেমনি হবে। আমি ত্রেতাযুগ থেকে এই যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছি ।”

আমি একটু হেসে সরে বসে প্যাকেট ছিঁড়ে খেতে লাগলাম । দুই পাখি তে ”ক্যাঁক ক্যাঁক” করে গল্প জুড়ে দিল। আমি চিরুনি বের করে চুলটাকে আঁচড়ে বাঁধলাম । চোখে কাজল আর ঠোঁটে লিপস্টিক লাগিয়ে ছোট আয়না টা দিয়ে নিজেকে দেখলাম। দ্রিঘাংচু আড়চোখে আমাকে দেখে নিয়ে বাইরে গেল। ফিরে এসে বলল,”চলো সুন্দরী, এবার বৃষ্টি কমেছে।” বেরিয়ে দেখি ঝিরঝিরি বৃষ্টি পড়ছে । আমি দ্রিঘাংচুর পিঠে ছাতা খুলে বসলাম।

বেশ কিছুক্ষণ উড়বার পর দেখি বৃষ্টি আর নেই। বরং নীচে বৃষ্টিতে স্নান  করা ঝকঝকে সবুজ পাহাড়ের গায়ে  ধূসর-সাদা মেঘের টুকরো ছড়িয়ে ছিটিয়ে  দাঁড়িয়ে আছে । পাহাড়কে নীল সমুদ্রের ঢেউ এসে আলতো ছুঁয়ে  আদর করে চলে যাচ্ছে । আমার মনে ”প্যাঁ প্যাঁ ”করে সানাই বেজে উঠল। মনে হল,  এখানেই বোধকরি তাকে খুঁজে পাব।

2

মেঘলা আকাশের নীচে নীল সমুদ্র আর সবুজ পাহাড়  ঝিমিয়ে পড়া “প্রেম প্রেম” ভাবটা কেমন যেন আবার চাগিয়ে তুলল। তখন সূয্যিমামা ঢুলুঢুলু চোখে হাই তুলতে তুলতে বাড়ি যাবার জন্য তৈরী হচ্ছে । এমনই একটা সময়ে দ্রিঘাংচু আমাকে নামিয়ে দিল একটা ছোট্ট নদীর ধারে, একটা বুনো জায়গায়। নদীর ধারে সারি সারি কালো পাথর নীচু পাঁচিল তুলে দাঁড়িয়ে আছে।আয়নার মতো পরিষ্কার জলে পাহাড়ের ছায়া, ছোট ছোট ঢেউ এর বুকে দোল খাচ্ছে। আহ্লাদে আটখানা হয়ে হাঁটু পর্যন্ত লেগিংসটা গুটিয়ে নদীর জলে পা ডুবিয়ে একটা পাথরের ওপর বসলাম। আর দ্রিঘাংচু ছোটো একটা কাক হয়ে একটা গাছের ডালে গিয়ে ঝিমোতে লাগলো ।

কোথায় এসে পড়লাম কে জানে ? পাহাড়ী নদীর জলে কুলকুল শব্দ  আর পাখিদের কিচিরমিচির , থোকা থোকা সাদা-হলুদ ফুলে সাজানো  গোছানো চারদিক । ফাটাফাটি যাকে বলে। মেজাজটা কে একেবারে ফুরফুরে করে দিল।
নদীর পাশে পাহাড়ী রাস্তা উঁচুতে উঠে গিয়ে বাঁদিকে মোড় ঘুরে হারিয়ে গেছে ।  হঠাৎ দেখি একটা লোক ঐ মোড়ের মাথায় আবির্ভূত হল। ক্যামেরা নিয়ে কসরৎ করতে করতে এদিকেই আসছে।  যাই দেখি, লোকটাকে জিজ্ঞেস করি এটা কোন জায়গা। ভাবামাত্রই কাজ। তড়াক করে উঠে দাঁড়াতে ভেজা পায়ে পাথরের ওপর পিছলে পড়লাম। ভাগ্যিস সেরকম লাগে নি।ওড়না আর ব্যাগ সামলে উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে দেখি লোকটা  শব্দ পেয়ে ছুটে  আসছে। চেঁচিয়ে জিজ্ঞেস করল, ” যাদা লাগা? ”
আমি বললাম, ”না ,না,…নেহি। কুছ নেহি হুয়া।”
লোকটি হেসে বলল, ” যাক্ বাঁচালেন তবে। না হলে এখন ডাক্তার খুঁজতে বের হতে হত ।”
আমি খুশীতে ডগমগ হয়ে বললাম,” বাঙালি! ”
লোকটা হেসে বলল,”সে আর বলতে…” ।
আমার ব্যাথা ট্যাথা সব হাওয়া হয়ে গেল। একগাল হেসে লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম, ”আচ্ছা বলুন তো জায়গাটার নাম কি?এত্ত সুন্দর অথচ নাম জানিনা!”
লোকটা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, ”মানে? বেড়াতে এসেছেন অথচ নাম জানেন না?”
ঢোক গিলে নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম, ”ঘুরতে ঘুরতে চলে এসেছি। আমার বন্ধু নামটা বলেছিল, কিন্তু ভুলে গেছি । কিছুতেই মনে করতে পারছি না।” কথা বলে আড়চোখে লোকটাকে দেখলাম। সে আমার কথা বিশ্বাস করেছে মনে হল, বলল, ” এটা পোলাদপুর। বাদশা ঔরঙ্গজেবের এক বীর সিপাহী ছিলেন পোলাদ জঙ্। শিবাজীর সাথে চিত্রা কেলানের যুদ্ধে  তিনি মারা যান এখানেই । কর্পোরেশন বিল্ডিংএর পেছনে ওনার সমাধি আছে। ওনার নামেই এই জায়গাটার নাম পোলাদপুর।..তা আপনি কি একাই ?” আমি বললাম, ”হ্যাঁ” ।  সে তখন বলল,”তাহলে চলুন । সামনে একটা কফি খাওয়ার জায়গা আছে । সেখানে বসেই কথা বলা যাক।” লোকটার সাথে হেঁটে  যেতে যেতে  দেখলাম আমার দিকে তাকিয়ে দ্রিঘাংচু  গলাটা কাত করে ক্যাঁকক্যাঁকিয়ে সেই বিশ্রী হাসি টা হাসছে ।  লোকটা বলে চলল, ”এই ছোট্ট পাহাড়ী শহরে হিন্দু মুসলমান পাশাপাশি আছে বহু বছর ধরে। বেশ মিলমিশ তাদের। ..আসুন।”

বসলাম গিয়ে কাফেতে,। একটুকরো মেঘের নীচে, পাহাড়ের গায়ের  মতো সবুজ রঙ মেখে । লোকটা  কাঁচের টেবিলের উল্টোদিকে বসে চশমার ওপর দিয়ে চোখটা তুলে বলল,”ক্যাপুচিনোই বলি।”
অর্ডার দিয়ে বলল,”আমি অর্ঘ্য। এখানেই থাকি চাকরী সূত্রে । যখন সময় পাই তখনই ক্যামেরা নিয়ে বেরিয়ে পড়ি। প্রকৃতি এখানে এত সুন্দর! আর পকেটে থাকে মাউথঅর্গ্যান। মাঝে মাঝে সুরের তুলি দিয়ে মনের ক্যানভাসে ছবি আঁকি।”
আমি মুগ্ধ হয়ে অর্ঘ্যর কথা শুনছি।
”ধরুন, এই ফুলটা আপনার জন্য ।”বলেই বুক পকেট থেকে আমাকে একটা ছোট্ট লাল ফুল বের করে দিল ।
”জানেন তো , এখানে কালভৈরব-যজ্ঞেশ্বরী দেবীর একটা মন্দির আছে। সবাই বলে খুব জাগ্রত।”
বেয়ারা এসে টেবিলের ওপর দুটো কাপ রেখে গেল। কফিতে চিনি দুধ মিশিয়ে স্টিয়ার করতে করতে অর্ঘ্যকে দেখছিলাম । বাঁদিকের কাটা ভুরু বাঁচিয়ে উসকো খুশকো চুল মাঝ কপালে এসে ছটপট করছে। অথচ চশমার পেছনে উজ্জ্বল শান্ত চোখে  সমুদ্রের গভীরে লুকিয়ে থাকা আকর। কফির কাপে চুমুক দিয়ে শুনে যাচ্ছি এই জায়গাটার গল্প ।
”জানেন, প্রতি বছর  এপ্রিল মাসে খুব ধুমধাম করে দেবীর পুজো হয়। এই সময় সবুজ-লাল-গেরুয়া রঙ মিলেমিশে এই পাহাড়ী শহর লোকে লোকারণ্য।” প্রকৃতি -পরিবেশ-মানুষ-সংস্কৃতি-লোকাচারের মিশেল তার গল্পে-কথায়। পেছনের পাহাড়ের পেছনের সূয্যিমামা ডুবতে বসেছে আর আমি ডুবুরি হয়ে সাঁতার কাটতে শুরু করেছি ওর কথার গভীরে নাকি ওর গহন মনের তলদেশের খোঁজে। আমার খোঁজা বোধহয় শেষ হল, নাকি …..। আমি  হাত বাড়িয়ে অর্ঘ্যর হাতটা ধরে বলতে গেলাম,  ”শোনো….” ।

-ও দিদি! তোমার কি শরীর খারাপ লাগছে? এসেই  টেবিলে মাথা রেখে শুয়ে পড়লে যে বড়ো! চা ও তো খেলে না । হতচ্ছাড়া কাকটা এসে কাপে ঠোঁট ডোবালো…।

আমি ধড়মড়িয়ে উঠে বসলাম । মালতী সামনে দাঁড়িয়ে আছে ।  জালনা পেরিয়ে চোখ  গেল বাইরের কদমগাছ টায়। কাকটা আমার দিকে তাকিয়ে চোখ পাকিয়ে বলল,”কঃ”।
”দ্রিঘাংচু নাকি?”
নাঃ। কিছুতেই ঘোর কাটছে না দেখি। ওয়াশ রুমে যাই। চোখেমুখে জল দিয়ে আসি। চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালাম। কোলের ওপর থেকে টুপ করে একটা লাল ফুল মাটিতে পড়ে গেল। হাতে তুলে নিয়ে দেখি এখনো টাটকা আর সুন্দর।

Related Posts

Saraswati-Devi
Potpourri

নদীতমা দেবীতমা সরস্বতী (Saraswati Devi)

January 29, 2020
Bhoot (Ghost) Chaturdashi festival
Potpourri

Bhoot (Ghost) Chaturdashi Festival

October 25, 2019
Seize the day and then let it go
Potpourri

Seize the day and then let it go

October 3, 2019
আশ্বিনের শারদপ্রাতে, অতীতের দুয়ারে ( On Bengali icon Birendra Kishore Bhadra)
Potpourri

আশ্বিনের শারদপ্রাতে, অতীতের দুয়ারে ( On Bengali icon Birendra Kishore Bhadra)

September 30, 2019
হঠাৎ দেখা (Sudden meeting)
Potpourri

হঠাৎ দেখা (Sudden meeting)

September 6, 2019
চল তবে মুম্বাইতেই চল (Let’s go to Mumbai)
Potpourri

চল তবে মুম্বাইতেই চল (Let’s go to Mumbai)

September 3, 2019
ADVERTISEMENT
ADVERTISEMENT
ADVERTISEMENT
D-2050 D-2050 D-2050
ADVERTISEMENT
ADVERTISEMENT
ADVERTISEMENT

About us

Enewstime.in is run by an individual – a Journalist by profession of Tripura with the active help of several journos including senior journalists of the State. On top of that, Enewstime.in being a subscriber of IANS news agency, we have plenty of multi-choice topics to offer to our esteemed readers. Enewstime.in is a venture reach global audience from a tiny State Tripura.

Latest News

The Third Eye: Is analysing Trump's Presidency challenge for strategic observers?

FIFA WC qualifiers: Colombia's Duran to miss Argentina clash; Chile loses Aravena for Bolivia duel

Scientists find gene mutation that links iron deficiency with Crohn’s disease

Priyanka Chopra’s daughter Malti Marie adorably does makeup, paints her tiny nails

Naver to establish US subsidiary for investment in local startups

BRS legislator Maganti Gopinath passes away

Contact us

ssss

  • Contact us
  • Advertising Policy
  • Cookie Policy
  • Disclaimer
  • Privacy Policy
  • Terms of Use

© 2025 Designed & Developed with ❤️ by Provibe Media LLP

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
No Result
View All Result
  • Home
  • News
    • Northeast
    • National
    • International
    • Tripura News
  • Sports
  • Business
  • Entertainment
  • Health
  • Features
  • Tenders

© 2025 Designed & Developed with ❤️ by Provibe Media LLP